পটিয়া উপজেলা নির্বাচন ২৯ মে, ভোট হবে স্বচ্ছ ব্যালটে

সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসের গণবিজ্ঞপ্তি জারি

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তপসিল ঘোষণার একদিন পর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিস।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার ও রির্টানিং অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম প্রামানিক স্বাক্ষরিত এ গন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সে অনুসারে ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে তৃতীয় দাপের পটিয়া উপজেলায় ভোট হবে আগামী ২৯ মে।

তপসিল ও গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ সময় ২ মে, যাচাই-বাছাই ৫ মে, ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮মে, আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে স্বচ্ছ ব্যালটের মাধ্যমে।

এর আগে ১৭ এপ্রিল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের ৩১তম কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম তৃতীয় তাপের তফসিল ঘোষণা করেন।

পটিয়া উপজেলা নির্বাচন কমিশনার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আগামী ২৯ মে পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে স্বচ্ছ ব্যালটের মাধ্যমে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে। মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৩ মে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান রেখে নতুন বিধিমালা করেছে ইসি।

এদিকে এবারের ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানতের অংক বাড়ানোসহ ইতোমধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনী নিয়ে ‘উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০২৪’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ১ লাখ টাকা জামানত দিতে হবে, আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। আগে উভয়পদে জামানত ছিল ১০ হাজার টাকা। গত ১৯ মার্চ এ বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

এছাড়াও নতুন বিধিমালায় ‘নির্বাচনী সময়েরও’ সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত নির্বাচনী সময় বলতে তফসিল ঘোষণা পর থেকে গেজেট প্রকাশের পর ১৫ দিন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এতে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

নতুন নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণক জমা দিতে হবে, উল্লেখ করতে হবে টিআইএন নম্বর।

আগের বিধিমালায় নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। এক্ষেত্রে প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। সংশোধিত বিধিমালা এটি সংশোধন করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশের কম পেলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

সংশোধিত বিধিমালায় নির্বাচনী ব্যয়ে পরিবর্তন এসেছে। আগের আইনে ১ লাখ ভোটারের জন্য প্রার্থী ব্যক্তিগত ও নির্বাচনী ব্যয় করতে পারেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা, ১ লাখ এক থেকে ২ লাখ ভোটারের জন্য ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ২ লাখের বেশি ভোটার সম্বলিত উপজেলার জন্য ১১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন।

নতুন  উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় চেয়ারম্যান বা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনি ব্যয় বাবদ অনধিক ২৫ লাখ টাকা এবং ‘মহিলা সদস্যথ পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয় বাবদ অনধিক ১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন।

আগে ভোটগ্রহণের তিন সপ্তাহ আগে থেকে প্রার্থীরা প্রচারণায় অংশ নিতে পারতেন। এবার তা সংশোধন করে প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে প্রচারণা শুরুর কথা বলা হয়েছে। প্রচার-প্রচারণার আওতায় এবার ডিজিটাল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও সন্নিবেশ করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিধানও শিথিল করেছে ইসি। এতদিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে ২৫০ ভোটারের সমর্থনসূচক সই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো। এটি এখন একেবারেই তুলে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভোটারদের সমর্থনসূচক সই লাগবে না।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীরা সাদাকালোর পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ও ব্যানার করতে পারবেন। এছাড়া নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোটের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে ইসির ক্ষমতা স্পষ্ট করা হয়েছে। 

এবারের উপজেলা নির্বাচনে ১২৮ টি কেন্দ্রে পটিয়ার ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩৮ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৬ জন।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!