দীর্ঘ ৭ মাস ধরে বন্ধ মিয়ানমার বর্ডার পাস ট্রানজিট যাতায়াত

দীর্ঘ ৭ মাস ধরে বন্ধ মিয়ানমার বর্ডার পাস ট্রানজিট যাতায়াত 1গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ : দীর্ঘ ৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে টেকনাফ টু মংন্ডু বর্ডার পাস ট্রানজিট যাতায়াত। এতে বিপাকে পড়েছে টেকনাফ স্থল বন্দরের মিয়ানমার মন্ডু শহর মুখি ব্যবসায়ীরা। ট্রানজিট যাতায়াত চালু না থাকায় সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব। আর দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নি¤œ আয়ের কিছু সাধারণ মানুষ। কারন এই সমস্ত নি¤œ আয়ের মানুষরা বর্ডার পাস ট্রানজিট যাতায়াত চালু থাকলে প্রতিদিন ব্যবসায়ীদের মালামাল উঠা-নামা করে অনেক টাকা রোজগার করতে পারত এবং মনের আনন্দে তাদের সংসার চলত। তার পাশাপাশি ট্রানজিট যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে যাত্রীবাহি বেশ কয়েকটি ট্রলার বিকল অবস্থায় পড়ে আছে নাফনদীতে। এতে এই সমস্ত ট্রলারের মাঝি ও মালিকরাও পড়েছে বিপাকে। পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারী বাহিনী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে টেকনাফ টু মিয়ানমার মংডু শহর বর্ডার পাস ইমিগ্রেশন কার্যক্রম। উল্লেখ্য, বিগত ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর গভীর রাত থেকে পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বিজিপি ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে হামলা, ভাংচুর, গোলাগুলির সুত্র পাত সৃষ্টি হয়। সেই সুত্র ধরে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে দীর্ঘ কয়েক মাস লাগাতার সাম্প্রাদায়ীক রোহিঙ্গা মুসলীমদের উপর শুরু হয় নির্বিচারে নির্যাতন, জ¦ালিয়ে দেওয়া হয় তাদের বাড়ি ঘর, এর পর শুরু হয় নির্বিচারে মানুষ হত্যা, সেই গণ হত্যা থেকে রেহাই পায়নি নারী ও শিশুরা। সেই সমস্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ টু মংন্ডু ট্রানজিট যাতায়াত হয়ে যায় বন্ধ। মন্ডু শহর মুখি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পড়ে যায় বিপাকে। দিনে পর দিন কমে আসে টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি ও রপ্তানি। কমে যায় সরকারী রাজস্ব। এবং মিয়ানমারের এই সহিংস ঘটনায় টেকনাফ স্থলবন্ধরের ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দেয় চরম হতাশা। কারন টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের কাছে আটকা পড়েছে। টেকনাফ স্থলবন্দর সুত্রে আরো জানা যায়, বিগত ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষি বিজিপি ক্যাম্পে হামলা, বিজিপি ও স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সাথে লাগাতার সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে মিয়ানমারের মংন্ডু শহর থেকে কোন প্রকার মালামাল আসতে পারেনি। এতে টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানিতে নেমে আসে স্থবিরতা । তবে উক্ত ঘটনার পর থেকে মিয়ানমার মন্ডু শহর থেকে মালামাল না আসলেও মিয়ানমারের জেলা শহর আকিয়াব থেকে বিভিন্ন প্রকার মালামাল আসা অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে টেকনাফ টু মংন্ডু বর্ডার পাস ট্রানজিট যাতায়াত বন্ধ থাকায় এই ট্রানজিট ঘাট থেকে সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব।
টেকনাফ স্থল বন্দরের দায়িত্বে থাকা অভিবাসন-ট্রানজিট কর্মকর্তা জাকির হোসেন খন্দকার জানান, পাশ^বর্তীদেশ মিয়ানমারের সাম্পাদায়ীক হামলা ও সহিংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভাল রাখার জন্য মিয়ানমার মন্ডু ট্রানজিট যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এই বর্ডার পাস যাতায়াত পুনরায় চালু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অভিবাসন সংস্থার ও সীমান্ত এলাকা আইন শৃংখলার বাহিনীর উর্দ্বতন কর্মকর্তারা মিয়ানমারের অভিবাসন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
অন্যদিকে টেকনাফ স্থল বন্দর ইনচার্জ জসিম উদ্দিন জানান, মিয়ানমারের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে দুই এক মাস মিয়ানমারে মংন্ডু শহর থেকে কোন পন্যবাহী ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি। তবে আমি আসার পর থেকে টেকনাফ স্থলন্দরের ব্যবসায়ীরা যোগাযোগের মাধ্যমে মিয়ানমার মন্ডু শহর থেকে মালামাল আনতে শুরু করেছে। এতে সরকারী রাজস্ব বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কোন ব্যবসায়ী এখনো পর্যন্ত আসা যাওয়া করতে পারেনি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!