দা-ছুরিতে চলছে শান, কামারের দোকানে বাড়ছে ক্রেতার ভিড়

দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদ উল আযহা। কোরবানির পশু কিনতে বাজারে ছুটছে মানুষ। অনেকে আগেভাগেও কিনে ফেলেছেন কোরবানির পশু। কোরবানের পশু ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছে কামাররাও। বিভিন্ন কামারপট্টিতে চলছে দা-ছুরি বানানোর ধুম। আবার অনেকে ঘরে আগে থেকে কিনে রাখা পুরাতন দা-ছুরিতেও শান দিয়ে নিচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ ছুরি ধার করানো হকারদের কাছে।

কোরবানিতে পশু কাটতে, মাংস কাটতে ধামা-ছুরি থেকে শুরু করে দা পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গত কয়েকদিন ধরে ভ্রাম্যমাণ ছুরি ধারানো হকারদের আনাগোনা বেড়েছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন অলিগলিতে। তাদের কাছে ঘরের পুরাতন ছুরি-দা-বটি নিয়ে হাজির হচ্ছে মানুষ।

এসব দা-ছুরিতে শান দিতে দু’পায়ে চালিত বহনযোগ্য একটি যন্ত্র কাঁধে নিয়ে অলিগলি চলে বেড়াচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ হকাররা। আর চলতে চলতে পথে হাঁক দিচ্ছেন ছুরি ধার করানোর জন্য।

এছাড়া চকবাজারের কামারপল্লীতেও দেখা গেছে দা-ছুরি বানানোর ধুম। কামাররা দোকানে বিভিন্ন আকারের দা-ছুরি বানিয়ে সাজিয়ে রেখেছেন। আবার অনেকে ঘরের পুরাতন ছুরি-দা এনে দিচ্ছেন ধার করানোর জন্য। এখানে আকারভেদে ধামা-দা বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা। একটি ছুরি তৈরি করতে আকারভেদে নেওয়া হচ্ছে ১২০ থেকে ২০০ টাকা। বড় ছুরিগুলোতে বানাতে একটি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। আর বটি বানাতে কামাররা নিচ্ছেন ৬০০ টাকা পর্যন্ত।

রোববার (২৫ জুন) চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ রেল হাউজিং, পাহড়তলী, খুলশী আবাসিক, চকবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

শুধুমাত্র কোরবানের মৌসুম এলেই ছুরি ধার করানোর যন্ত্র কাঁধে নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরেন জিন্নাত আলী (৫৬)। আকবরশাহ এলাকায় রোববার বিকালে তার দেখা মেলে। মূলত এসব এলাকায় তেমন কোনো নির্দিষ্ট কামারপল্লী না থাকায় মানুষজনের ভরসা এসব ভ্রাম্যমাণ হকার। জিন্নাত আলী বলেন, ‘দা, বটি, ধামা ধার করাতে প্রতি পিস ৫০ টাকা নিচ্ছি। আর ছোট ছুরি প্রতিটি নিচ্ছি ৩০ টাকা করে। সপ্তাহখানেক ধরে দৈনিক দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে আয় করছি।’

আকবরশাহ এলাকার বাসিন্দা সেলিম বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানের ঈদ এলে ছুরি-বটি ধার করিয়ে নিই। ঘরের কাছে ধার করানোর মানুষ পাওয়ায় ছুরিতে শান দিয়ে নিচ্ছি। বড় ছুরি ১০০ ও বটি ৫০ টাকা নিচ্ছে ভ্রাম্যমাণ হকাররা।’

চকবাজারের কামারপট্টিতে ছুরি কিনতে আসা মো. ইশতিয়ার মাহমুদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানের ঈদ আসলে দা-ছুরি কেনা হয়। এবারও এখানে এসেছি কিনতে। কিন্তু গত বছরের চেয়ে দাম একটু বেশি চাইছে। একটি মাঝারি আকারের দা ৪০০ টাকা দাম দিচ্ছে। আর বড় ছুরিগুলোর দাম ৫০০ টাকার ওপরে বলছে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!