ডেঙ্গুর মৌসুমে চট্টগ্রামে মশক নিধন বন্ধ কেন— প্রশ্ন তুললেন সুজন
পোর্ট কানেকটিং সড়ক দ্রুত মেরামতের দাবি
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম অনেকটাই বন্ধ। অবাধে বাড়ছে মশার দৌরাত্ম্য। নগরীর অধিকাংশ এলাকার মানুষ মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। সেই সাথে বর্ষা সমাগত। এ সময় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। দ্রুততার সাথে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে করোনা মহামারীর সাথে ডেঙ্গুও মহামারী আকার ধারণ করে নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়াবে।
এমন অভিযোগ করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন প্রশ্ন তুলেছেন, ডেঙ্গুর এই মৌসুমে কেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে?
সুজন বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনের প্রধানতম কাজ হচ্ছে নগরবাসীর নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা এবং এ লক্ষ্যে যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করা। কিন্তু উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মকান্ডকে ঠিক সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে স্তুপ করে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হচ্ছে। এর ফলে পরিবেশ দূষণও বাড়ছে। তাছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা কর্মকাণ্ডে শিথিলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রতিদিনের আবর্জনা প্রতিদিন পরিস্কার করা হয় না। এছাড়া নগরীর নালা ড্রেনসমূহও ময়লা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে রয়েছে। ফলে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে উৎকট গন্ধ এবং মশার উর্বর প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে নালা ড্রেনগুলো।’
তিনি বলেন, ‘পোর্ট কানেকটিং সড়কটি চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত এ সড়কটির সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ প্রায় চার বছরেও শেষ করতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন। এ সড়ক দিয়ে পুরো নগরীর প্রায় অর্ধেক গাড়ি পণ্য আমদানি-রপ্তানি কাজে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশ করে এবং বের হয়। বিশেষ করে বাস, ট্রাক, ট্রেইলর, কাভার্ড ভ্যানের মতো ভারী যানবাহন ছাড়াও অনেক হালকা বাহনও এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটি সংস্কারের নামে বন্ধ থাকায় ভারী যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে ওই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলোর চাপ পড়ছে নগরীর অন্য সড়কগুলোতেও।’
সুজন বলেন, ‘পোর্ট কানেকটিং সড়কের গর্তে ভারী যানবাহন উল্টে গিয়ে প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক দুঘটনাও ঘটেছে। সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অচল থাকায় এর আশেপাশের ব্যবসা-বাণিজ্যও লাটে উঠেছে। রাস্তাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত না করলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সামান্য বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তাই করোনার পাশাপাশি জলাবদ্ধতাকেও অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে নগরীর অধিকাংশ খাল ও নালাকে বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক গতিপথ রূদ্ধ করা হয়েছে। এতে করে অল্প বৃষ্টিতেই নগরীর অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। দ্রুততার সাথে এ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য চসিক, চউক এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই। না হয় নগরবাসীকে এর খেসারত দিতে হবে।’
এমএফও