টেকনাফ সাবরাং সৈকতে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার ডুবি

টেকনাফ সাবরাং সৈকতে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার ডুবি 1গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ : টেকনাফ সাগর উপকুল ব্যবহার করে ফের বৃদ্ধি পেয়েছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা আগমনের ঢল। নিজের জন্মভুমি ছেড়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে। তারা জীবনের ঝুঁকিনিয়ে যে যেভাবে পারছে ছোট ছোট ফিশিং ট্রলারের মাধ্যমে মানবিক বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এদিকে বেশ কয়েকদিন রোহিঙ্গাদের আগমনের সংখ্যা অনেকটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আবারো রোহিঙ্গাদের আগমন শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়ত ১শত দেড়শত,দুইশত করে অনুপ্রবেশ অব্যাহত আছে। গতকাল ৮ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে প্রায় ১শত ৫০জন রোহিঙ্গার আগমন করেছে টেকনাফ সীমান্ত এলাকা দিয়ে। বঙ্গোপসাগর হয়ে টেকনাফ উপকূল দিয়ে পালিয়ে আসার সময় রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার সাবরাং সৈকত উপকুলে উল্টে যায়। এই সময় রোহিঙ্গারা তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে ৪ রোহিঙ্গা শিশু পানিতে ডুবে যায়।  এতে ৩ শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা গেলেও এখনো একটি শিশু নিখোঁজ রয়েছে।
সুত্রে আরো জানা যায়,নিহত শিশুদের স্থানীয়ভাবে দাফন করা হয়েছে। পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গারা ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সাবরাং মুন্ডার ডেইল সৈকত উপকূল পয়েন্ট দিয়ে এপারে ঢুকে। প্রচন্ড কুয়াশায় কুলে ভিড়ার সময় একটি ট্রলার ডুবে যায়। উক্ত ঘটনায়  তিন রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু ঘটে এবং অপর এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সবাই মিয়ানমারের বুছিডং থানার ওলাফে গ্রামের বাসিন্দা।
নিহতরা হচ্ছে আবদুল হাইয়ের পুত্র আবদুন নবী (৯ মাস), মোঃ ইয়াছিনের মেয়ে উম্মে সালমা (৪ বছর), আবদুল আজিজের পুত্র মোঃ আয়ুব (৭ মাস)। নিখোঁজ শিশুটির পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। সাবরাং খুরেরমুখ বিওপির বিজিবি কমান্ডার সাইফুল ইসলাম জানান,পালিয়ে আসা ৫১ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।

এদিকে ট্রলার ডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাঈন উদ্দিন খাঁন জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগীতায় নিহত শিশুদের খুরেরমুখ কবস্থানে দাফন করা হয়েছে।
অপরদিকে একই দিন টেকনাফ সদর ইউনিয়ন মিঠাপানিরছড়া সৈকত পয়েন্ট দিয়ে সকাল ৫টার দিকে আরো অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা টেকনাফ উপকুলে প্রবেশ করে। এই সমস্ত পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সবাই আরাকান রাজ্যের বুছিডং থানার হান্দং, উলাফে ও সিন্দিপ্রাংয়ের বাসিন্দা।

উলাফে গ্রামের ছৈয়দ হোসেন (২৬) জানান, তীব্র খাদ্য সংকটের কবলে পড়ে মনের জ্বালা নিয়ে নিজের জন্মভুমি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমার পরিবারের ৫ জনসহ আরো ৭ পরিবার সদস্য এক সাথে গত শুক্রবার নিজের বাড়ী, ঘর ফেলে বের হয়ে নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্তে অবস্থান করি। এরপর ধংখালী সীমান্ত থেকে রাত ১১ টার দিকে ফিশিং ট্রলার করে রাত তিন টায় এপারে প্রবেশ করি।
এদিকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি অংশ টেকনাফ পৌর স্টেশনের আবু ছিদ্দিক মাকের্টে এসে জড়ো হয়। সেখানে পুলিশের বিশেষ টহল দলের সদস্যরা তাদের তালিকাভুক্ত করে হারিয়া খালী সেনা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়।
কিছু রোহিঙ্গা নিজেরাই আত্মীয় স্বজনের সহযোগীতায় বিভিন্ন ক্যাম্পে চলে যায়। এখানে দায়িত্বরত এসআই পাবন চক্রবর্তী জানান, সকাল ১১ টা পর্যন্ত ৫১ জন রোহিঙ্গাকে তালিকাভূক্ত করে সাবরাংয়ের হারিয়াখালী অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!