ছয়জনের দিকে স্পটলাইট সাতকানিয়ার উপজেলা ভোটে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোর না কাটাতেই চট্টগ্রামে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে মাতামাতি। তফসিল ঘোষণা না হলেও নির্বাচনে কারা প্রার্থী হচ্ছেন—এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নির্বাচন ঘিরে অন্তত আধা ডজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে বেশ জোরেশোরে। এরা সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এদের অনেকে নির্বাচন করার আভাস দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও টাঙিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত থেকে কেউ নির্বাচন করবে—এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।

আলোচনায় থাকা প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।

তাদের মধ্যে রয়েছেন— দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও এওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু ছালেহ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এবং জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান।

রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে নির্বাচন করতে চান আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা নুরুল আবছার চৌধুরী। ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে চান তিনি। জনগণ সেবা করার সুযোগ দিলে নিজের সর্বোচ্চটুকু বিলিয়ে দিতে চান তিনি।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ও সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন, ‘২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। আওয়ামী লীগের রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান হলে কাজের সেবা করার সুযোগ বেশি পাব। আশা করি সাতকানিয়াবাসী আমাকে নির্বাচিত করবেন।’

অন্যদিকে রাজনীতিতে পোড় খাওয়া কুতুব উদ্দিন চৌধুরীর অবস্থান রয়েছে তৃণমূলে। ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও নেতৃত্ব দেওয়া কুতুবের শক্তি আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। জনগণ তাকে সেবা করার সুযোগ দেবে বলে আশাবাদী কুতুব।

সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গতবারও আমি প্রার্থী ছিলাম। সেবার দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন করা হয়নি। এবার দলীয় মনোনয়ন থাকবে না। তাই প্রার্থী হতে কোনো বাধা নাই। সাতকানিয়ার গণমানুষের জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আসছি। মানুষ আমাকে মূল্যায়ন করবে বলে আশা করছি।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘গত দুই মেয়াদে সদ্য সাবেক সাংসদের সাথে পর পর দুই উপজেলা চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব ও দূরত্বের কারণে সাতকানিয়া উপজেলায় উন্নয়ন কার্যক্রম এ দৃশ্যমানভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং সুশাসনের কাংখিত বিষয়টি অধরা থেকে গেছে, তাই দলীয় নেতা কর্মীসহ উপজেলার সাধারণ মানুষ আমি বর্তমান সাংসদদ্বয়ের সাথে সমন্বয় করে উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পারবো— এমনটা মনে করে আমাকে এই পদে প্রার্থী হিসেবে প্রত্যাশা করছেন। সবেমাত্র জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমন্বয়ের কাজ শেষ করেছি। তাই উপজেলা নির্বাচন করার যাবতীয় প্রস্তুতি আমার আছে। তবে তফসিল ঘোষণার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবো।’

সাতকানিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গত উপজেলা নির্বাচনে আমি ১২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০১টিতে প্রথম হয়েছি। নির্বাচিত হয়ে মানুষের পাশে থেকেছি। ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে উন্নয়ন করার সুযোগ কম পেলেও মানুষের চাহিদা পূরণ করতে নিয়মিত অফিস করেছি। মানুষের ওপর আমার আস্থা আছে। সেই আস্থা থেকেই আমি নির্বাচন করব।’

এওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু ছালেহ বলেন, ‘আগের এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে সমন্বয় ছিল না। যার কারণে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান এমপির সঙ্গে আমার বোঝাপড়া ভালো। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সমন্বয় করে পরিকল্পিত উন্নয়ন করা যাবে। সেজন্যই আমি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!