চুয়েটের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে যাত্রী পরিবহন, রোগী নামিয়ে দেওয়া হয় মাঝপথে

বিশ্ববিদ্যালয় ডাক্তারের নির্দেশে তোলা হয় যাত্রী

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) পরিবহনসেবা নিয়ে অসন্তোষ বেড়েই চলছে। চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বাস সেবা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বরাবরই অসন্তুষ্ট। এবার প্রশ্ন উঠেছে অ্যাম্বুলেন্সসেবা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে চলছে যাত্রী পরিবহন। আর এসব অনিয়মের তালিকায় আছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয় ডাক্তারের নামও।

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অসুস্থ শিক্ষার্থীকে মাঝপথে নামিয়ে দিয়ে অপর যাত্রীদের ঠিকঠাক গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া ঘটনা ঘটেছে। ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস নিয়ে আসার কথা থাকলেও তা করেননি অ্যাম্বুলেন্সচালক।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাতে চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল (ইইই) বিভাগের বিদায়ী বর্ষের (১৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান চট্টগ্রাম নগরে ডাক্তার দেখানো জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে একটি অ্যাম্বুলেন্স বুকিং করেন। বুকিং অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৮টায় মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে উঠলেও তার সঙ্গে উঠে যায় আরও সাতজন। এরা কেউই নাজমুলের পূর্বপরিচিত না। এ ঘটনায় বিস্মিত হয়ে তিনি তার ফেসবুকে আইডিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে অ্যাম্বুলেন্সসেবা নিয়ে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

অপরিচিত যাত্রী ওঠানো বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক আল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টির জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি। আমি ইচ্ছেকৃতভাবে কাউকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলিনি। দু’জন বাসচালক উঠে গেছেন। তাদেরকে আমি আর নিষেধ করতে পারিনি। আর চুয়েট মেডিকেল সেন্টারের ডা. মো. আব্দুল্লাহ উঠেছিলেন এবং তিনি সঙ্গে মেডিকেল সেন্টারের এক কর্মচারীকে তার পরিবার নিয়ে উঠতে দিয়েছেন। আমি ডাক্তারের আদেশ মানতে বাধ্য, তাই তাদের নিষেধ করিনি।’

এবিষয়ে জানতে ডা. মো. আব্দুল্লাহর মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। একইসঙ্গে মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. রানী আকতারের সঙ্গেও মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করে সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমাকে অ্যাম্বুলেন্স চালক হাসপাতালে নিয়ে যাবেন এবং ক্যাম্পাসে নিয়ে আসবেন। কিন্তু নগরের আন্দরকিল্লা যাওয়ার কথা থাকলেও আমাকে মুরাদপুর নামিয়ে দেন এবং বাকি যাত্রীদের ঠিকঠাক গন্তব্যে নিয়ে যান। আমার নামে বুকিং করা অ্যাম্বুলেন্সে শুধুমাত্র আমারই ওঠার কথা ছিল। এছাড়া চালক আমাকে ক্যাম্পাসেও নিয়ে আসেনি। এরকম ঘটনা চুয়েটে হরহামেশাই হচ্ছে। আমি জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।’

মেডিকেল সেন্টারের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তর। ওই ঘটনা বিষয়ে দপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাকে ই-মেইলে অভিযোগ জানানোর জন্য বলেছি। তার অভিযোগ পাওয়া পর আমরা অবশ্যই এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।’

এ বিষয়ে যানবাহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কারও একান্তই জরুরি প্রয়োজনে গাড়ির দরকার হয়, তবে যানবাহন শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আমি ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য ওই চিকিৎসক এবং চালক, উভয়ের সঙ্গে কথা বলবো।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!