চবিতে রাজনৈতিক গ্রুপিং ও সংঘাতের দায় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে

নওফেলের নির্বাচনী সংবাদ সম্মেলনে আ জ ম নাছির

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রাজনৈতিক গ্রুপিং ও সংঘাতের দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম সিনিয়র্স ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন চট্টগ্রাম–৯ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে একথা বলেন আ জ ম নাছির।

আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আমি চবি’র ভিসি মহোদয়কে অনেকবার বলেছি। এটার স্বাক্ষী জেলা পুলিশ সুপার ও ডিআইজি মহোদয়। চবি’র রাজনৈতিক গ্রুপিংকে কেন্দ্র করে যে বিরোধগুলো হয় বা যে নেতিবাচক সংবাদ আপনাদের মাধ্যমে জাতি জানতে পারে, এ ধরনের গ্রুপিংয়ের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই আমাদের। এটা হলো বাস্তবতা। আর এক্ষেত্রে আমাদের তো কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নাই। এই বিষয়টা আপনারা যদি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন, তাহলে আমার মনে হয় আমরাও এটা থেকে রক্ষা পাব।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একই সুরে নওফেল বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রুপিংয়ের নাম ধরে যে সংঘাতগুলো হচ্ছে, এটা আমি নিজের থেকে স্টাডি করে বুঝলাম, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সেখানে বহিরাগত মানে পাশ করে যাওয়া ছাত্রত্ববিহীন শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন ধরে আছেন।

তিনি বলেন, আমি ভিসি মহাদয়কে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিলাম। যে বা যার আন্ডার গ্র্যারজুয়েট ডিগ্রি ১০ বছরের ওপর হয়ে গেছে, আর পোস্ট গ্র্যাচজুয়েট ডিগ্রি পাঁচ বছরের ওপর হয়ে গেছে এবং অছাত্র যারা তাদের হল থেকে পাঠিয়ে দেন। ১০ বছরের ওপরে একটা শিক্ষার্থীর আন্ডার গ্র্যাবজুয়েট করতে লাগাচ্ছে। তার তো কোনো যুক্তি নাই সেখানে থাকার। সেটা কোন গ্রুপ বা কি, এটা দেখার দরকার নাই। আপনি আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা পাবেন। দয়া করে বের করে দেন।

নওফেল বলেন, আমরা উপাচার্য মহাদয়ের কাছে বলেছি, জিনিসটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী ওখানে পড়ে থাকবে, ও কী করবে? ও ঘরে তো যাবে না। ও গ্রুপ বানাবে। তারপর এর পেছনে এক্স-ওয়াই-জেড ইত্যাদি নানান নাম দেবে। নাম দিয়ে, ওটা দিয়ে সে চলছে, ওই শিক্ষার্থীগুলো হলে থাকার জন্য।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যখন সেখানে কোনো কাজ নাই, বেকার, পড়াশোনা শেষ করে ফেলেছে তখন কিছু কিছু দল-সংগঠন করছে, নাম নিচ্ছে কতক্ষণ উনার নাম, আমার নাম। এবং তারা একে অপরের সঙ্গে টিজিংয়ের মত করে। অর্থাৎ এখানে বুলি, র‌্যাগিং হচ্ছে। র‌্যাগিং এবং বুলিংকে তারা রাজনৈতিক একটা রূপ দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি এখানে জিরো টলারেন্স বলেছি। কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি। নির্বাচনের পরে আমরা চিঠি দিয়ে সেটা বলব। বারবার বলছি, এখনো উপাচার্য মহাদয় আছেন। তার মেয়াদও প্রায় শেষ হয় গিয়েছে। এটা যদি তিনি করে যেতে পারতেন বা পারেন, আমার মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদানে অনেক শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি গ্রুপে বিভক্ত। প্রতিটি গ্রুপের আবার রয়েছে বিভিন্ন উপগ্রুপ। এর মধ্যে একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা নিজেদের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। অন্যটির নেতাকর্মীরা আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। এই দুই গ্রুপ আবার ১১টি উপগ্রুপে বিভক্ত। আ জ ম নাছিরের অনুসারী উপগ্রুপগুলো হলো একাকার, কনকর্ড, রেড সিগন্যাল, উল্কা, বাংলার মুখ, সিক্সটি নাইন, এপিটাফ, ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স), ও সংগ্রাম (মেয়েদের)। নওফেলের অনুসারীদের উপগ্রুপ দুটি হলো বিজয় ও সিএফসি।

এআইটি/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!