চট্টগ্রাম মেডিকেলে টয়লেট নিয়ে যন্ত্রণায় কিডনি রোগীরা, চারটির তিনটিই নষ্ট

বাঁচতে এসে বিকল কিডনি নিয়ে ফিরছে রোগী

চট্টগ্রাম মেডিকেলের কিডনি বাঁচাতে গিয়ে উল্টো বিকল হয়ে বাড়ি ফিরছেন রোগীরা। ওয়ার্ডে চিকিৎসা চললেও সময়মতো টয়লেটে যেতে পারেন না রোগী। এই ওয়ার্ডে চারটি টয়লেট থাকলেও তিনটি পরিত্যক্ত। অপরটিও পরিত্যক্ত হওয়ার পথে। মাত্র একটি টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে রোগীদের দাঁড়াতে হচ্ছে লাইনে। এ যেন হাসপাতালে জীবন বাঁচাতে এসে উল্টো “মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’।

অথচ কিডনি ওয়ার্ডের রোগীদের পানি পান করতে হয় ডাক্তারের নির্দেশ মতো পরিমাণ অনুযায়ী। কিন্তু পানি পান করে তারা সময়মতো প্রস্রাব করতে টয়লেটে যেতে পারেন না। ফলে রোগ আরও বেড়ে যায়। এতে কষ্ট বাড়ে রোগীর।

চট্টগ্রাম মেডিকেলের কিডনি ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, এখানে প্রতিদিন নতুন ভর্তি, চিকিৎসাধীন ও ডায়ালাইসিস রোগী মিলে ভর্তি থাকে প্রায় ১৬০ থেকে ১৭০ জন। কিডনি রোগীদের কিছুক্ষণ পর পর প্রস্রাবের বেগ পায়। ডাক্তারের নির্দেশনা মতো প্রস্রাবের বেগ দেখে পানি পান করেন রোগীরা। কিন্ত টয়লেটের দুর্দশার কারণে রোগী প্রস্রাব আটকে রাখেন।

চারটি টয়লেট ঘুরে দেখা গেছে, ওয়ার্ডের ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে টয়লেটের ভেতরে-বাইরে। কমোড জ্যাম হয়ে থাকায় নোংরা পানি বারান্দায় চলে এসেছে। শুধুমাত্র একটি টয়লেট ব্যবহারের যোগ্য হলেও সেখানে ময়লা মাড়িয়ে যাওয়া রোগীর জন্য দুরূহ হয়ে পড়ে।

এদিকে চিকিৎসাধীন রোগীদের ফাইলপত্র ঘেটে দেখা গেছে, ভর্তির শুরুতে যে রোগীর ক্রিয়েটিনিন লেভেল ১ এর বেশি ছিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেটি ৩ পার হয়েছে। অথচ স্বাভাবিক অবস্থায় একজন নারীর ক্রিয়েটিনিন লেভেল ০.৫৯ থেকে ১.০৪ এমজি । আর পুরুষের ক্ষেত্রে সেটি ০.৭৪ থেকে ১.৩৫ এমজি। প্রায় দশ জন রোগীর ক্রিয়েটিনিন লেভেল চিকিৎসাধীন সময়ে আগের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে রিপোর্টে।

কিডনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক নারী বলেন, ‘এই ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমি দিনে দু’বারও টয়লেটে যেতে পারি না। টয়লেটের দুর্গন্ধে সেখান থেকে আসার পরই বমি হয়। এই ভয়ে আমি টয়লেটে যেতে চাই না।’

হান্নান নামের একজন রোগী জানান, চারটি টয়লেটের মধ্যে ৩টি নষ্ট। আর যে একটি মোটামুটি ভালো সেখানে নারী-পুরুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এই দাঁড়িয়ে থাকার ভয়েই টয়লেটে যেতে মন চায় না।’

কিডনি ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান ডা. নূরুল হুদা বলেন, ‘টয়লেটের সমস্যা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। পরিষ্কার করে ব্যবহারের উপযোগী করা হলেও তা দুইদিনও ঠিক থাকে না। এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আবারো কথা বলবো।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!