কোনো ধরনের নির্দেশনা ছাড়াই চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কার্গো খালাস বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ২১ দিনে ইউব্যাগেজের পণ্য চালান খালাস করার বাধ্যবাধকতা জারি করেছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এয়ারপোর্ট অ্যান্ড এয়ারফ্রেইট ইউনিট।
ইউনিটের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ২১ দিনের মধ্যে ইউব্যাগেজ খালাস করে না নিলে তা নিলামের বিক্রয়যোগ্য হবে। গত ৮ নভেম্বর এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
কিন্তু চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউব্যাগেজের পণ্য চালান খালাসের কাজ করা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে পণ্য চালান খালাস বন্ধ রেখে এই ধরনের নির্দেশনা কাস্টমস হাউসের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একদিকে চালান খালাস বন্ধ রাখবে অন্যদিকে ২১ দিনের মধ্যে খালাস করার বাধ্যবাধকতা অবান্তর।
এদিকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের চালান খালাসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও নিরসন হয়নি অচলাবস্থার। গেল দু’সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে এয়ারকার্গোর পণ্য খালাস বন্ধ রাখার পর গত বৃহস্পতিবার চালু করার বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মাসুদুর রহমান।
জানা গেছে, গত রোববার থেকে নিজেদের পণ্য ছাড় করতে কাগজপত্র জমা দিয়ে অপেক্ষা করলেও কার্গো খালাস বন্ধই রয়েছে। সোমবারও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা পণ্য ছাড় করতে কাগজপত্র জমা দেন। এদিন দফায় দফায় সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি কমিশনার মাসুদ ও সহকারী কমিশনার জয়নাল। দিনভর ইমিগ্রেশন যাচাই, অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়া শেষ করা হলেও কোনো কনসাইনমেন্ট ছাড় করা হয়নি।
রাতে অপেক্ষারতদের জানানো হয়, মঙ্গলবার ‘কার্গো খালাস’ শুরু করা হবে। কিন্তু মঙ্গলবার আউট পাস নিয়ে ওয়্যারহাউজে গেলেও পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু করেনি কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল বশর বলেন, ‘ব্যাগেজ চালানে প্রবাসীরা পরিবারের জন্য দুধ, ট্যাংক পাউডারসহ নানা পচনশীন পণ্য পাঠান বিদেশ থেকে। কিন্তু পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় মালগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। আমরা চাই, ব্যাগেজ খালাস দ্রুত চালু হোক। খালাস বন্ধ থাকায় প্রবাসীদের পণ্য পৌঁছতে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। এর মধ্যে ২১ দিনে বাধ্যবাধকতা ‘মরার ওপর খড়ার ঘাঁ’।
তথ্য মতে, ব্যাগেজ রুলের আওতায় অতিরিক্ত পণ্য কার্গোর মাধ্যমে দেশে এনে সিঅ্যান্ডএফের মাধ্যমে ছাড় করিয়ে থাকেন প্রবাসীরা। কিন্তু দেশে ফেরার পর সেই পণ্য ছাড়িয়ে আনতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীরা। নিয়ম অনুযায়ী কার্গো ফ্লাইটে আসা পণ্য ওয়্যারহাউজে পৌঁছার ২১ দিনের মধ্যে খালাস করা না হলে নিলাম করে দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী সর্বশেষ কার্গো ফ্লাইটে আসা পণ্যগুলোর ১৮ দিন পার হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের জয়েন্ট কমিশনার নাজিউর রহমান বলেন, ‘আমরা কার্গো খালাস বন্ধ রাখিনি। তবে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে একটু সময় হয়তো লাগছে।পণ্যের অ্যাসেসমেন্ট ও ইমিগ্রেশন পেপার যাচাই, আউটপাস হবার পর পণ্য খালাস না করার কথা নয়। ব্যাগেজ রুলের নিয়মানুসারে ২১ দিনের মধ্যে খালাসের নিয়ম রয়েছে।’
ডিজে