চট্টগ্রাম বন্দরে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ সেবা

চট্টগ্রাম বন্দরে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ সেবা 1বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখলে বন্দর ব্যবহারকারীসহ সবাই তিনটি সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।

২৪ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি সচল রেখে সেবা প্রদানে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী ১ আগস্ট এ সেবার উদ্বোধন করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার চট্টগ্রাম কাস্টমস ও চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান।

চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকলে ৩টি সুবিধা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা বন্দর ব্যবহারকারী আছেন তারা সার্বক্ষণিক সেবার সুযোগ পাবেন। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সব সময় সংযুক্ত থাকতে পারবেন। ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৪ ঘণ্টা বন্দর চালু থাকলে সকল ক্ষেত্রেই চাপ কমবে, দক্ষতা বাড়বে। বিশেষ করে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেহেতু মাল রাতে খালাস হবে সে জন্য জনগণের চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি হবে না।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সচিবদের সাথে সভা করেন। সে সময় তিনি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমদানি-রপ্তানি যাতে গতিশীল হয় তা নিশ্চিত করতে তিনি এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা সকলে কাজ করছি। বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এর চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তৎপর আছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে আজকে চট্টগ্রাম বন্দর সরেজমিনে দেখলাম। এর মাধ্যমে অনুভব করছি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে সমন্বিতভাবে কাজ চলছে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করার যে প্রবণতা ছিল, সেটা আছে। কিন্তু যেহেতু আমরা ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখবো সেজন্য বাড়তি সময়ের জন্য অন্যান্য যে সরকারি বিভাগ আছে বিশেষ করে লেনদেনের জন্য ব্যাংক ব্যবস্থা, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিএসটিআই, কোয়ারেনটাইন, আনবিক শক্তি কমিশন তাদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা হচ্ছে।’

মো. নজিবুর রহমান বলেন, ‘নৌ পরিবহন মন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ১ আগস্ট এর উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যাপারে খুবই উৎসাহী। তার অনুশাসনে আমরা কাজ করছি। কাজ যাতে সুন্দরভাবে হয় সেজন্য আমরা সকলে নিবেদিত আছি।’

তিনি বলেন, ‘আগামীকাল নৌ পরিবহন সচিবকে নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সকল অংশীজনদের নিয়ে সভা করা হবে। আগামী ২৪ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ স্টেকহোল্ডারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ২৪ জুলাই আলোচনার মাধ্যমে একটি পথ নকশা হয়ে যাবে কিভাবে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা বন্দর চালু রাখা যায়।’

তিনি বলেন, ‘বন্দরকে ২৪ ঘণ্টা সচল রাখতে এনবিআরের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় সবই করেছি। বাড়তি জনবল দেয়া হয়েছে। আলাপ আলোচনা করে কর্মকর্তাদের ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে প্রস্তুত করা হয়েছে। কর্মকর্তারা উৎসাহের সাথে কাজ করছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস একাডেমি, ভ্যাট, বন্ড থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমসকে সহযোগিতা করা হবে।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘এনবিআর পিএসসি থেকে প্রায় ৬০০ সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা পাচ্ছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে পর্যাপ্ত জনবল নিশ্চিত করা হবে। যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করা হচ্ছে। স্ক্যানিং মেশিন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজকে একটি স্ক্যানিং বিভাগ তৈরি করা হচ্ছে। যাতে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নন ইনক্লুসিভ ইন্সপেকশন করে দ্রুততার সাথে মালামাল খালাস করা যায়।’

স্ক্যানিং বিভাগ সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ বিভাগ চালু করতে কাস্টমস তার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে। কাস্টমস হাউজ থেকে এনবিআরে প্রস্তাব দেয়া হয়। এনবিআর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ জন প্রশাসনে দিয়েছে। জন প্রশাসনের মতামত পেলে আমরা অর্থমন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবো। পরে মন্ত্রী সভা ও সর্বশেষ সচিব কমিটিতে চূড়ান্ত হবে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দ্রুততার সাথে তা সম্পন্ন করবো।’

এরআগে এনবিআর চেয়ারম্যান বন্দরের কার্যক্রম সার্বিকভাবে পরিদর্শন করেন। এ সময় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল খালেদ ইকবাল, এনবিআর সদস্য, চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার আবদুল্লাহ খান, সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বাচ্চুসহ এনবিআরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!