চট্টগ্রাম নগরীতে হঠাৎ ফাঁকা রাস্তাঘাট, গণপরিবহন সংকটে জনভোগান্তি

কোন ধরণের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বন্দরনগরী চট্টগ্রামে হঠাৎই যান চলাচল কমে গেছে। নগরীর ব্যস্ততম সড়কগুলোতে নেই গণপরিবহনের চাপ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।

আতাউর রহমান স্টল গোলা ক্রসিং এ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির করেন। তিনি জানান, ‘রাত বা সকালেও যদি জানতাম পরিবহন বন্ধ তাহলে সময় হাতে নিয়ে বা অন্য ব্যবস্থা করে চলে যেতাম অফিস। এখানে এসে শুনছি গাড়ি চলাচল বন্ধ, এখন আমি অফিসে যেতে পারছি না। এটা তো কোন নিয়মের পর্যায়ের পড়ে না। এই সুযোগে রিকশাওয়ালাও ডাবল ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে।’

জানা যায়, চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচ পরিবহন শ্রমিক গ্রেফতারের প্রতিবাদে কয়েকটি শ্রমিক ও পরিবহন মালিক সংগঠনের অঘোষিত বাস-মিনিবাস, হিউম্যান হলার ও অটোট্যাম্পু ধর্মঘটে সড়কে গণপরিবহন চলাচল সীমিত হয়ে গেছে।

তবে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও ধর্মঘটের বিষয়টি তারা স্বীকার করছেন না।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে নগরীর মুরাদপুর, অক্সিজেন, টাইগারপাস, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিনের মতোই এদিনও কর্মজীবী মানুষ মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও গাড়ির দেখা মিলছে না। দু-একটা যদিও আসছে, সেগুলোতে তিন ধারণেরও ঠাঁই নেই। বাধ্য হয়ে অনেকে দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকা খরচ করে রিকশা কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছুচ্ছেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আগেরদিন (বুধবার) চাঁদাবাজির অভিযোগে নগরীর অলংকার মোড় থেকে র‌্যাবের হাতে পাঁচ পরিবহন শ্রমিক গ্রেফতার হন। গ্রেফতাররা হলেন- মো. আজাদ (৩৪), মো. অহিদ (৩৮), মো. আরিফ হোসেন (৩০), নারায়ণ দে (৫১) ও মো. সিদ্দিক হোসেন (৪৫)।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট আহ্বান করে কয়েকটি পরিবহন মালিক সংগঠন। ধর্মঘট চলাকালে সব ধরনের বাস-মিনিবাস, হিউম্যান হলার এবং অটোট্যাম্পু বন্ধ থাকার কথা রয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কোন ধর্মঘটের কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। আমরা জানিও না কেন বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। কয়েকজায়গা থেকে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি প্রশাসনের নির্যাতন বেড়েই চলছে। কোনো কারণ ছাড়াই মামলা দেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন তো লাইনম্যানদের চাঁদাতোলা বন্ধ। তাও কয়েকজন লাইনম্যান চাঁদা তুলছিলো সেজন্য বুধবার অলংকার থেকে গণপরিবহন মালিকদের ৫ জন লাইনম্যানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এতে ক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিক এ অঘোষিত ধর্মঘট পালন করছে। আমরা বিকেল ৫টায় জরুরি মিটিং ডেকেছি। পরিবর্তী সিদ্ধান্ত সেখানে নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে নগর ট্রাফিক দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) এনএম নাসিরুদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, একটা ধর্মঘটের কথা আমি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কোনো চিঠিপত্র পাইনি। সড়কে কিছু কিছু গণপরিবহন চলছে।

আরএ/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!