চট্টগ্রামে নালার নির্মাণকাজে অনিয়ম, বাধা দেওয়ায় যুবককে মামলার হুমকি প্রকৌশলীর

তোপের মুখে ‘ওসির ভাই’ পরিচয় দেন প্রকৌশলী

লোহার রড ও সিসি ঢালাই ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে নালা। শুধুমাত্র ইটের গাঁথুনি দিয়ে গড়া হচ্ছে দেয়াল। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এক যুবককে মামলার হুমকি দিয়েছেন নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী। এমনকি নিজেকে ‘ওসির ভাই’ বলেও পরিচয় দেন।

শনিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় এই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরের ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড এলাকায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডের ছাদেক শাহ্ মাজারের রাস্তার পাশের নালার কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। নালায় কোনো ধরনের লোহার রড এবং ঢালাই দেওয়া ছাড়াই শুধুমাত্র ইট বসিয়ে কাজ করছে শ্রমিকরা।

এর আগেও একইভাবে কাজ করায় ওয়ার্ডের অন্য একটি অংশে নালাটি সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে পানি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে প্রতিনিয়ত। এজন্য এলাকাবাসী পুনরায় একই ধরনের দুর্ভোগে যাতে না পড়ে সেজন্য ঘটনাস্থলে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত তানভীর নামে একজনকে বিষয়টি জানান। তানভীর পরে স্থানীয় যুবক মো. তাজ উদ্দিনকে সিটি কর্পোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শহীদুল্লাহকে ফোনে ধরিয়ে দেন। এরপর ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা শহীদুল্লাহ কাজে নিয়ে কোনো ধরনের কথা বললে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন ওই যুবককে। কোনো অভিযোগ থাকলে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানোরও পরামর্শ দেন প্রকৌশলী।

পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন প্রকৌশলী শহীদুল্লাহ। সেসময় মামলার ঘটনা জানতে চাইলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে ক্ষমা চান তিনি। পরে লোহার রড দিয়ে ঢালাই দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর মো. ইলিয়াস বলেন, ‘আমার এলাকায় কোথাও কোনো নিম্নমানের কাজ হলে এলাকাবাসীকে সেটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমিই বলেছি।’

ইঞ্জিনিয়ারের মামলার হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মামলার হুমকি দেওয়ার তিনি কে?’

এই বিষয়ে স্থানীয় যুবক তাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরাই এই রোডটি ব্যবহার করবো। যদি ঠিকমতো কাজ না হয় তবে আমরাই ক্ষতির সম্মুখীন হবো। তাই শুধু ইট না দিয়ে লোহার রড দিয়ে ঢালাই দেওয়ার অনুরোধ করলে ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল্লাহ আমাকে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। এমনকি নিজেকে হালিশহর থানার ওসির ভাই বলেও পরিচয় দেন। পরে আমি থানায় খবর নিয়ে জানতে পারি, ওসির এমন কোনো ভাই নেই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘ওটা একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। গতকাল রাতে একজন ওখানে ইট-বালি নামাতে দেয়নি, বলছে ওরা এগুলো সাপ্লাই দেবে। সেজন্য আমি মনে করছি, এই লোকই সেই লোক—তাই মামলার কথা বলছি। পরে জানতে পারি, এই লোক অন্যজন। আমি পরে রড দিয়ে কাজ করার কথা বলে এসেছি।’

ওসির ভাই পরিচয় দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওসির ভাই বলছি আরকি, ওখানে বাঁচানোর জন্য তো কেউ নেই, ওরা আমাকে মারলে কি আপনি বাঁচাবেন? বাঁচার জন্য বলছি আরকি। তাছাড়া ওখানে মোজাহেদ নামে একজন আছে কুতুবদিয়া বাড়ি, আমার ভাইয়ের মতো।’

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!