চট্টগ্রামে এবার শিখর ছুঁয়েছে করোনা, ৭৮৩ শনাক্তের পাশে ১০ মৃত্যু একদিনেই

গত পাঁচদিনেই শনাক্ত হল প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী

চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্রতিদিনই করোনা গড়ছে নতুন নতুন রেকর্ড। চট্টগ্রামে আগেরদিন হওয়া শনাক্তের রেকর্ড টিকেনি ২৪ ঘণ্টাও। ৩৭ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে গত ২৪ ঘণ্টায় শিখর ছুঁয়েছে করোনা। নতুনভাবে ৭৮৩ জনকে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫১০ জন নগরের এবং ২৭৩ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে গত পাঁচদিনেই শনাক্ত হল প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী। রেকর্ডসংখ্যক শনাক্তের দিনেই করোনা কেড়ে নিয়েছে আরও ১০ জনের প্রাণ। যাদের মধ্যে ৮ জনই উপজেলার।

এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগী গিয়ে দাঁড়াল ৬৩ হাজার ৬৯৬ জন। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৯ হাজার ২৮২ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১৪ হাজার ৪১৪ জন। এদের মধ্যে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ৭৫৪ জন। এদের মধ্যে ৪৮৮ জন চট্টগ্রাম নগরের। আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২৬৬ জন।

শুক্রবার (৯ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৮টি ল্যাবে ২ হাজার ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৭৮৩ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসে।

এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ৭৬ জনের শরীরে। এদের মধ্যে ৩৬ জন নগরের এবং ৪০ জন চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৪৭০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনার উপস্থিতি মিলে দিনের সর্বোচ্চ ১৭২ জনের দেহে। এদের মধ্যে নগরের ১২১ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৫১ জন।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৩১৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭ জনকে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে নগরের ৮০ জন। বাকি ২৭ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ২০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৭৫ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৪৫ জন নগরের অধিবাসী, বাকি ৩০ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ২৫ জনের করোনা পজিটিভ আসে। তাদের মধ্যে ১৮ জনই নগরের, ৭ জন উপজেলার।

এছাড়া, নগরী ও উপজেলার বিভিন্ন ল্যাবে এন্টিজেন টেস্ট করানো হয় ৫১৯টি নমুনা। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ১৮৯ জনের। এর মধ্যে ৭৫ জন নগরের এবং ১১৪ জন বিভিন্ন উপজেলার।

নগরীর বেসরকারি করোনা পরীক্ষাগারের মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। তাতে ৬৫ জনের দেহে ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৬৪ জনই নগরের, ১ জন উপজেলার। শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪২ জন করোনা পজিটিভ রোগীর খোঁজ মিলে। যাদের ৪০ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জন করোনা রোগীর হদিস পাওয়া যায়। যাদের ১৮ জন নগরের, ৪ জন উপজেলার। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার ল্যাবে ৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরের ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

এদিন, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাব ও ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে করোনার কোন নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।

উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত রোগী পাওয়া যায় হাটহাজারীতে। সেখানে ৪৩ জনের দেহে ভাইরাসটির জীবাণু পাওয়া যায়। এছাড়া, সীতাকুণ্ডে ৪২ জন, মিরসরাইয়ে ৩৭ জন, রাউজানে ২৮ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ২৩ জন, ফটিকছড়িতে ২০ জন, আনোয়ারায় ১৯ জন, পটিয়ায় ১৬ জন, সন্দ্বীপে ১৫ জন, সাতকানিয়ায় ১২ জন, বাঁশখালীতে ৭ জন, লোহাগাড়ায় ৫ জন, চন্দনাইশ ও বোয়ালখালীতে ৩ জন করে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!