চট্টগ্রামের ৬০ গ্রামে একদিন আগেই পালিত হলো ঈদ

চট্টগ্রামের ৬০ গ্রামে বুধবার (১০ এপ্রিল) পালিত হয়েছে ঈদ উল ফিতর। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রায় ১২৫ ধরে এভাবেই ঈদ পালন করা হয় এসব গ্রামে।

তবে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদ উল ফিতর উদযাপিত হবে দেশে অন্যান্য জায়গায়।

মূলত সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের জাঁহাগিরিয়া শাহ ছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা আগাম ঈদ পালন করেছেন। হানাফী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে বিশ্বের কোথাও চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সুফি সাধক সৈয়্যদ মাওলানা মোখলেসুর রহমান জাঁহাগিরীর দেখানো পথ অনুসরণ করে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা হয়।

বুধবার (১০ এপ্রিল) জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের সৈয়্যদ মাওলানা মোহাম্মদ আলীর ইমামতিতে ১ম জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় ও দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মনজুর আলীর ইমামতিতে ২য় জামাত সকাল ৯টায় ইদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

অন্যদিকে মির্জাখীল দরবার শরীফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুল হামিদ শাহ’র জাহাঁগিরি (নুরুল আরেফিন) ইমামতিতে মির্জাখীল দরবার শরীফে সকাল ১০টায় ও সৈয়দ ড. মাওলানা মাকসুদুর রহমানের ইমামতিতে সকাল সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

১২৫ বছরের রীতি মেনে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার বুলার তালুক, হরিনার পাড়া, ফকির পাড়া, সর্বল কাজী বাড়ি, চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাইমাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, বরমা, ধোপাছড়ি, দোহাজারি, জামিজুরি, মোহাম্মদপুর, পশ্চিম এলাহাবাদ, উত্তর কাঞ্চননগর, জুনিঘোনা, আব্বাসপাড়া, মাঝের পাড়া, দিঘির পাড়া, পন্ডিত বাড়ি, মোস্তা আলী শাহ, কেন্দুয়াপাড়া, কেশুয়া, মোহাম্মদপুর, উত্তর হাশিমপুর, ছৈয়দাবাদ, খুনিয়ারপাড়া, পটিয়ার শ্রীমাই, হাইদগাঁও, ফকির পাড়া, বাথুয়া, সাতকানিয়ার রুপকানিয়া, বাঁশখালীর জলদী, গুনাগরি, কালীপুর, গন্ডামারা, মিরিঞ্জিরতলা, ছনুয়া, সাধনপুর, আনোয়ারার তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, চরণদ্বীপ, খরণদ্বীপ, লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া, চুনতি, পুটিবিলা, উত্তর সুখছড়ি, বাংলাবাজার, মইশামুড়া, খোয়াছপাড়া, বাজালিয়া, কাঞ্চনা, গাটিয়াডাঙ্গা, পুরানগড়, মনেয়াবাদসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের লক্ষাধিক অনুসারী ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করছেন।  

এছাড়া বোয়ালখালী, হাটাহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, হাতিয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, মীরসরাই, লক্ষ্মীপুর, সীতাকুণ্ড, কুমিল্লা, সিলেট, মৌলভীবাজার, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, নলসিটি, খুলনা, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেখানে মির্জাখীল ও জাহাঁগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী রয়েছেন, তারাও ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন।

জাঁহাগিরিয়া দরবার শরীফের মাওলানা আবদুর রহমান জানান, মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিল রেখে বুধবার আমরা আমাদের অনুসারীদের নিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি। মির্জারখীলসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার অন্তত অর্ধ শতাধিক গ্রামে থাকা দরবার শরীফের মুরিদরাও একই সময়ে ঈদুল ফিতর পালন করছে।

প্রায় আড়াইশ বছর আগে সাতকানিয়া মির্জাখিল গ্রামে হযরত মাওলানা মোখলেছুর রহমান জাহাগিরি (রঃ) হানাফী মাজহাবের ফতোয়া অনুযায়ী পৃথিবীর যে কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহাসহ সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করার ফতোয়া দিয়েছেন। তারই উত্তরসুরি হযরত মাওলানা আবদুল হাই জাহাগীরির অন্যতম প্রধান খলিফা চন্দনাইশ শাহ্ছুফি দরবারের পীর হযরত মাওলানা শাহ্ছুফি আমজাদ আলী (রঃ) এর মুরিদ ও অনুসারিরা একই নিয়মে গত ১২৫ বছর ধরে সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছেন।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!