চট্টগ্রামের এমপির ফুলের মালা সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির গলায়, দুজনেরই আছে পরোয়ানা

ভোটে ‘অনন্য অবদান’ রাখায় সংবর্ধনা

সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম-১১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এমএ লতিফ অংশ নিলেন জমকালো সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। এদের মধ্যে দুজনকে সাংসদ নিজে সদ্যসমাপ্ত ভোটে ‘অনন্য অবদান’ রাখায় ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যজন ছিলেন মঞ্চে উপস্থিত।

চট্টগ্রামের এমপির ফুলের মালা সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির গলায়, দুজনেরই আছে পরোয়ানা 1

গত রোববার (২৮ জানুয়ারি) নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থানীয় সাংসদ এমএ লতিফ ওই সংবর্ধনা সভার আয়োজন করেন। জানা গেছে, চতুর্থবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় এমএ লতিফ একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। যারা ভোটের দিন পর্যন্ত তার পক্ষে কাজ করেছেন তাদের সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেন। সেখানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত তিনজন আসামিকে মঞ্চে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।

এদের একজন মোহাম্মদ আলমগীর পতেঙ্গা ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য। অন্যজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম। এছাড়া অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন পতেঙ্গার আলোচিত রফিক হত্যামামলার আসামি মোহাম্মদ ইলিয়াস প্রকাশ গাভী ইলিয়াসও।

রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান, চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। সেখানে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত দুই আসামি আলমগীর ও নুরুল আলমকে। রাত ৮টার দিকে সাংসদ এমএ লতিফ মোহাম্মদ আলমগীরকে গাঁদা ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নিতে দেখা গেছে। এছাড়া সাংসদ লতিফ তাকে জড়িয়ে ধরে বেশ কিছু সময় ভাববিনিময় করেন।

চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর। এলাকার লোকজন তাকে ‘মধু আলমগীর’ নামেই চেনেন। তিনি আবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা। এই ক্ষমতার দাপটে তিনি ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করেন। একইসঙ্গে করে বেড়ান সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা। কিন্তু এবার তিনি ফেঁসে গেছেন চেক প্রতারণা মামলায়।

কিন্তু চেক প্রতারণা মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও জানেন না পতেঙ্গা থানার ওসি। ফলে পুলিশের চোখের সামনে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।

এদিকে আলমগীরের বিরুদ্ধে ১১ জানুয়ারির একটি গ্রেপ্তরি পরোয়ানার কপি চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে এসেছে। সেটিতে দেখা গেছে, মোহাম্মদ আলমগীরকে এক বছরের সাজাসহ জরিমানা করা হয়েছে।

অন্যদিকে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলমের বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।

তবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি আলমগীরের বিষয়ে জানতে চাইলে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার থানায় এখনও এমন কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসেনি। এমন পরোয়ানা আসলে অবশ্যই আসামি গ্রেপ্তার করবো।’

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!