করোনায় নিস্তব্ধ নাগরিক জীবন, মানুষের মন ভালো নেই

করোনা সংক্রমণ রোধের সাধারণ ছুটিতেই চিরচেনা এই ব্যস্ত নগরী হঠাৎ করেই যেন প্রাণহীন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। সড়কে যান চলাচলের ব্যস্ততা নেই, মানুষের কাজের তাড়া নেই, নিম্নবিত্তের অর্থনৈতিক সংকট, রোগে সংক্রমিত হওয়ার ভয় নিয়ে যেন একপিঠ দুশ্চিন্তার বোঝা নিয়ে হেঁটে চলেছে একটি নিস্তব্ধ নগরী।

চট্টগ্রাম নগরে করোনা রোগী শনাক্তের নাগরিক মনে ভর করেছে কর্মহীনতার ভয়, ব্যবসায়ে ক্ষতি, খাদ্য সংকটের আতংক। সব মিলিয়ে মন ভালো নেই নগরবাসীর।

বুধবার (৮ এপ্রিল) নগরীর জিইসি মোড়, টাইগারপাস, মুরাদপুর, অলংকার, একে খান সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা দেখা যায়। মানুষ ও বাহন অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। রাস্তায় দরিদ্র মানুষগুলো ত্রাণের আশা, নেতার বাড়ির সামনে সাহায্যপ্রার্থীদের ভিড়। যেন অন্য এক অচেনা নগরী।

করোনা শনাক্তের পর আকবরশাহ, খুলশী, ডবলমুরিং, চকবাজার থানা এলাকার কিছু বাড়ি লকডাউনের ফলে নগর জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

টাইগারপাস এলাকার কামরুল হাসান (৪৫) বলেন, ‘অনিশ্চিত আগামীর চিন্তায় আছি। সব চেয়ে বেকায়দায় আছে এখানের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। সম্মানের সাথে দুমুঠো খাবার, মাস শেষে বাড়ি ভাড়া, কর্মহীন কীভাবে চলবে দিন? ’

করোনায় নিস্তব্ধ নাগরিক জীবন, মানুষের মন ভালো নেই 1
করোনার কারণে লোকশূন্য হয়ে পড়েছে সিআরবি এলাকাও। ছবি: আজীম অনন

হামজার বাগ এলাকার ফাহিনা ইয়াসমিন (২৮) বলেন, ‘কোনটা গুজব কোনটা সত্য বুঝতে পারি না। চিরচেনা রাজপথকেও ভয় পাচ্ছ। কর্মহীন দুপুর জুড়ে দুশ্চিন্তা,সংবাদেও কোন আশার কথা নেই। নতুন নতুন আক্রান্তের খবর নিয়ে কিভাবে ভাল থাকি,বলেন?’

মুরাদপুর মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালক ফজলে রাব্বি (৪৫) বলেন, ‘মুখে মাস্ক দিয়ে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়েছি। করোনার ভয়ে আমার মেয়ে মাস্ক পরিয়ে দিয়েছে। এটিতে দম বন্ধ হয়ে আসতে চায় আমার। তবু কাজ করেই বাঁচতে হবে।’

করোনা নিয়ে আলাপরত ট্রাফিক বক্সের বাইরে কয়েক জন সার্জেন্ট বলছিলেন, ‘নিত্য বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে বিদেশের করোনা আপডেট নয় জানছি নিজের দেশের নিজে বাস করা নগরীটির করোনা আপডেট।’

রিয়াদ (২১) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোথায় যাচ্ছে আমাদের নাগরিক স্বপ্নগুলো। ধনীদের অর্থ আছে, দরিদ্ররা কিছুটা হলেও সহায়তা পাচ্ছে। আমরা মধ্যবিত্তরা কোথায় যাব। দিন যত যাচ্ছে ততেই বাড়ছে সমস্যা। যেন আমার জীবনের গল্পগুলোও লক হচ্ছে হয়ে আসছে ধীরে ধীরে।’

জেএস/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!