ওসি পাঁচলাইশের বিরুদ্ধে মামলা করে ব্যবসায়ী আত্মগোপনে, দুদক বলছে তদন্ত প্রতিবেদন শীঘ্রই

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন এক শিপিং ব্যবসায়ী। তার নাম নুরুল আবছার। ‘প্রশাসনের লোক’ পরিচয়ে একের পর এক হুমকিতে মামলা দায়েরের পর থেকে ভয়ে আত্মগোপন করে আছেন বাদি। মোবাইলেও সংযোগ মিলছে না তার। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছেন তিনি। ‘মুক্তি’ হিসেবে তিনি মামলা দায়ের করার ঠিক একমাসের মাথায় মামলাটি প্রত্যাহারে এরই মধ্যে আদালতে আবেদনও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নন খোদ সিএমপির কর্তারাও।

তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক (মহানগর) নুরুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলছেন, ‘পতেঙ্গার শিপিং ব্যবসায়ী নুরুল আবছারের আদালতে দায়ের করা মামলার তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নিয়ম অনুসারে ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার তদন্তের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও অনেকগুলো বিষয় সামনে রেখে তদন্তের কাজ চলছে। দুই পক্ষের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই মামলার প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে।’

শিপিং ব্যবসায়ী নুরুল আবছারের আইনজীবী মোমিনুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত ২৫ এপ্রিল মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু আদালত মামলা প্রত্যাহারে ওইদিন কোন সিদ্ধান্ত দেননি। দুদকের তদন্ত রিপোর্ট আসা সাপেক্ষে ১২ জুন শুনানি দিন ধার্য করেছে আদালত।’ তবে এটি আদৌ প্রত্যাহার হবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন উপ পরিচালক (মহানগর) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার আলামত হিসেবে যেসব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে তার আলোকে প্রতিবেদন তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাদি তো মামলাটির সত্যতা প্রমাণে যাবতীয় তথ্যাদি দিয়েছে। প্রত্যাহার করলে তদন্ত প্রতিবেদনে এর কোন প্রভাব পড়বে না।’

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ব্যবসায়ী নুরুল আবছার আমার বিরুদ্ধে যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন সেটা তিনি আবার প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’ ওনাকে কোন ধরনের হয়রানি কিংবা হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘বাদি নিজের ইচ্ছেয় মামলা প্রত্যাহার করেছে।’

এদিকে পাঁচলাইশ থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা এবং মামলা পরবর্তী বাদিকে হুমকির বিষয়ে মুখ খুলছেন না সিএমপির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অপারেশন) আমেনা বেগম মুঠোফোনে দুবারই বিষয়টিকে এড়িয়ে কোন মন্তব্য না করে নিজের ব্যস্ততার কথা জানান।

উল্লেখ্য, ২৫ মার্চ শিপিং ব্যবসায়ী নুরুল আবছারকে ক্রসফায়ারের ভয় ও টাকা নেওয়ার অভিযোগে ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া ও ছয় পুলিশ সদস্যসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!