আফগান স্পিনারদের সামনে নতজানু বিসিবি একাদশ

যে উইকেটে আল-আমিন আলো ছড়াতে পারবেন, সে পিচের সুবিধা আফগান স্পিনাররা নেবেন না, তা কী করে হয়! সেটিই হয়েছে। বাঁ হাতি চায়নাম্যান বোলার জহির খানের সঙ্গে দলের অধিনায়ক রশিদ খানের লেগস্পিনে গোটা প্রথম ইনিংস জুড়ে হাঁসফাঁস করেছে বিসিবি একাদশের ব্যাটসম্যানরা। ১১.৩ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন জহির খান। ৮ ওভার বল করে ২৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন রশিদ খান। এই দুজনের তোপে ১২৩ রানেই থেমে গেছে বিসিবি একাদশের ইনিংসের চাকা। বল হাতে সফল সেই আল-আমিনই ছিলেন দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, ২৯ করেছেন তিনি। এনামুল হক, নাঈম হাসান ও নুরুল হাসানদের কেউই কুড়ি ছাড়ানো স্কোর করতে পারেননি। ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারানো বিসিবি একাদশ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে। কেউই তেমন কোনো জুটি গড়ে তুলতে পারেননি।

নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বে খেলতে নামা বিসিবি একাদশের বিপক্ষে ড্র হলেও মূল ম্যাচের আগে নিজেদের এগিয়ে রাখলো সফরকারী আফগানিস্তান। দুই ওপেনারকে আউট করতে পারেনি স্বাগতিক বোলাররা। প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও আফগান ব্যাটসম্যানরা নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে ঠিকঠাকভাবেই। পরে বোলাররাও নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন ঠিকঠাকভাবেই। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে আফগানরা ২৮৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। ১২৩ রানেই অলআউট হয় বিসিবি একাদশ। পরে বিনা উইকেটে ১৪ রান তোলে আফগানরা। দুই অধিনায়ক রশিদ খান এবং নুরুল হাসান সোহান ম্যাচটি ড্র বলে মেনে নেয়।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগান দলপতি রশিদ খান। শুরুতে উইকেটের জন্য লড়তে হয় স্বাগতিকদের। দুই ওপেনার ইসানুল্লাহ এবং ইব্রাহিম জাদরান ফিফটি পেয়েছেন। নটআউট থেকেই স্বেচ্ছায় ব্যাটিং ছেড়েছেন। ইহসানুল্লাহ ১৩৭ বলে ৭টি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৬২ রান। ১২৪ বলে ৬টি বাউন্ডারিতে ৫২ রান করেন ইব্রাহিম জাদরান। তিন নম্বরে নামা জাভেদ আহমাদি ব্যক্তিগত ৩ রানে ফিরলে আফগানদের প্রথম উইকেটের পতন হয় ১৩১ রানের মাথায়।

চার নম্বরে নামা রহমত শাহ (৭) নিজের ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। হাশমতউল্লাহ শহীদি ৬১ বলে তিনটি চারের সাহায্যে করেন ২৬ রান। ১৬ রান আসে সাবেক দলপতি আসগর আফগানের ব্যাট থেকে। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী ৭৯ বলে একটি করে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারিতে করেন ৩৩ রান। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইকরাম আলি খিল ১ রানে বিদায় নেন।

আফসার জাজাই ৭৫ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। দলপতি রশিদ খান ১৪ বলে ১৩ রান করেন। শেষ দিকে ৩১ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন কায়েস আহমেদ। বিসিবি একাদশের হয়ে আল আমিন ১৮ ওভারে ৩ মেডেন নিয়ে ৫১ রান খরচায় তুলে নেন চারটি উইকেট। ১৯ ওভারে ৪৩ রান খরচায় তিনটি উইকেট পান সুমন খান। এছাড়া, মেহেদি হাসান রানা, মানিক খান, সালাউদ্দিন শাকিল, জুবায়ের হোসেন, আসাদুল্লাহ গালিব কোনো উইকেটের দেখা পাননি।

ব্যাটিংয়ে নেমে বিসিবি একাদশের ওপেনার এনামুল হক বিজয় ৩৫ বলে করেন ১৯ রান। আরেক ওপেনার সাব্বির হোসেন ৪, ফজলে মাহমুদ ৮, নাঈম ইসলাম ১৩, আল আমিন ২৯ রান করেন। দলপতি সোহান করেন ১৫ রান। এছাড়া, ইরফান শুক্কুর ৯, ফারদিন হাসান ১৪, সুমন খান ৩, মেহেদি রানা ০, মানিক খান ০ রান করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান: ৯৯ ওভারে ১ম ইনিংসে, ২৮৯/৯, ইনিংস ঘোষণা (ইহসানউল্লাহ ৬২, ইব্রাহিম ৫২, জাভেদ ৩, রহমত ৭, শহিদি ২৬, আসগর ১৬, নবি ৩৩, ইকরাম ১, আফসার ২০*, রশিদ ৬*; সুমন খান ৩/৪৩, আল আমিন ৪/৫১)।
বাংলাদেশ: ৪৩.৩ ওভারে ১ম ইনিংসে, ১২৩/১০ (এনামুল ১৯, সাব্বির ৪, ফজলে ৮, নাঈম ১৩, আল আমিন ২৯, সোহান ১৫, ইরফান ৯, ফারদিন ১৪, সুমন ৩; রশিদ ৩/২৬, জহির ৫/২৪)
আফগানিস্তান: ৩.৫ ওভারে ২য় ইনিংসে ১৪/০
ফল: ম্যাচ ড্র

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!