আওয়ামী লীগের ৩ নেতাকে পিটিয়ে আবারও ‘আলোচনায়’ বদি

দীর্ঘদিন আলোচনার বাইরে থাকার পর নিজের দলের ৩ নেতাকে পিটিয়ে আবারও আলোচনায় টেকনাফের বহুল আলোচিত সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও একই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তারের স্বামী আবদুর রহমান বদি। দলীয় বর্ধিত সভায় বক্তব্যের বিরোধীতা করায় পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিসহ তিন নেতাকে পিটিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) ইফতারের আগে উপজেলা হল রুমে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিতিতে টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

দলীয় কার্যক্রমে ‘অযৌক্তিকভাবে’ নাক গলানোর প্রতিবাদ করায় নেতাদের মারধর করেন বদি।

মারধরের শিকার তিন নেতা হলেন- টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইউছুফ (মনো), পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. ইউছুফ ভুট্টো ও উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক।

টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, আবদুর রহমান বদি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হলেও টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে অযৌক্তিকভাবে নাক গলানো ও গ্রুপিং সৃষ্টি করা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এসবের প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর চড়াও হন আবদুর রহমান বদি।

হামলার শিকার মো. ইউছুফ (মনো) বলেন, ‘বর্ধিত সভা চলাকালে সাবেক সংসদ সংসদ বদি পৌর কমিটিকে ডিঙ্গিয়ে বারবার ওয়ার্ড কমিটিকে প্রাধান্য দিয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় আমি আমার বক্তব্যে সময় বদির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাই। একপর্যায়ে বদি মঞ্চ থেকে নেমে হল রুমের বাইরে অপেক্ষমান তার ক্যাডার বাহিনীকে ডেকে এনে নিজে সরাসরি এসে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে যুগ্ম সম্পাদক ইউছুফ ভুট্টোকেও বেধড়ক মারধর করেন বদি ও তার লোকেরা।’

এ ঘটনার ভিডিও করতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হককেও মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নেন বদির ক্যাডাররা।

এছাড়া টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগ নেতা জাহেদ হোসেন মুন্নার ওপরও হামলার চেষ্টা করা হয়। এ সময় বদি বাহিনীর হামলায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সময় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বদির নেতৃত্বে তার ভাই আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি আবদুশ শুক্কুর, নুর মোহাম্মদ ওরফে লাস্টিপসহ বদির ক্যাডার বাহিনী ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটায়। ইতোমধ্যে মারধরের একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য জেলা সাংগঠনিক টিমের নেতাদের উপস্থিতিতে পূর্ব নির্ধারিত বর্ধিত সভায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ আলম রাজা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রঞ্জিত দাশ, ইউনুস বাঙালি, উপজেলা সভাপতি মাস্টার জাহেদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশরসহ জেলা ও উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মারধরের বিষয়ে জানতে আবদুর রহমান বদির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে জেলা সাংগঠনিক টিম লিডার (উখিয়া-টেকনাফ) শাহ আলম রাজা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ হয়েছে। বাহিরে কোন কিছু ঘটে থাকলে সেটা আমার জানা নেই। আমি হলরুম থেকে বের হওয়ার পর শুনেছি মারধরের ঘটনা ঘটেছে। হামলার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না।’

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!