চট্টগ্রাম থেকে বিমানে যাচ্ছে ৫৯ পদের সবজি, ৯ মাসে গেল ১২৬২ মেট্রিক টন

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে চলতি অর্থ বছরের (২০২১-২২) জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ১২৬২ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি হয়েছে বিদেশে। ৫৯ পদের সবজি চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি রপ্তানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে। এরমধ্যে জুলাই থেকে ডিসেম্বরে সবজি রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে রপ্তানি ৪৬২ মেট্রিক টন।

তবে গত অর্থ বছরের (২০২০-২১) শীত মৌসুমে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে মোট ৭০৪ মেট্রিক টন সবজির রপ্তানি হয়েছিল। সেবার রাজস্ব আয় হয়েছিল দুই লাখ ৩২ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু এ বছরের ৬ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৮০০ মেট্রিক টন। শীত মৌসুমের তিন মাসে সবজি রপ্তানি গত বছরের হিসেবে কমেছে প্রায় ২০০ মেট্রিক টন।

এদিকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জানুয়ারিতে ১২৪ মেট্রিক টন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮৪ মেট্রিক টন, মার্চে ১৫৪ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি হয়। এ তিন মাসে রাজস্ব আদায় হয় ১ লাখ ২৬ হাজার ১১৫ টাকা।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর, উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র ছাড়াও সবজি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশের সবজির বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্যের কাতার, সৌদি আরব, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইউরোপের যুক্তরাজ্য, ইতালি ও ফ্রান্স। এছাড়া বাহরাইন, ওমান, মালয়েশিয়া, সুইডেন, কানাডা, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশেও কিছু সবজি রপ্তানি হয়। রপ্তানি হওয়া সবজির মধ্যে বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন সবজিই গেছে বেশি। এরমধ্যে রয়েছে কচুর লতি, কচু, পটল, ঝিঙে, শসা, তিতকরলা, কাঁকরোল, বরবটি, শিম, লেবু, জলপাই, সাতকরা, লাউসহ আরও নানান সবজি। তবে প্রতিবছর শীতের শুরুতে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে শীতকালীন সবজি যায় সবচেয়ে বেশি।

উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক শৈবাল কান্তি নন্দী বলেন, ‘করোনার সময় কার্গো রপ্তানি বন্ধ ছিল পুরোপুরি। ফ্লাইটে সবজি রপ্তানি শুরু হয়েছে কিছুদিন আগে। যদিও শীতকালীন সবজির চাহিদা এবার কম ছিল। ফ্লাইটে করেই কিছু সবজি রপ্তানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। গতবছর সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৭০৪ মেট্রিক টন সবজি গেছে। কিন্তু এ বছর তা একটু কমেছে। গতবছরের সেপ্টেম্বরে ২৫৩ মেট্রিক টন গেলেও এ বছরের সেপ্টেম্বরে গেছে ২০০ মেট্রিক টন। গত বছরের অক্টোবরে ২৭৪ মেট্রিক টন গেলেও এ বছরের অক্টোবরে গেছে ২১৪ মেট্রিক টন, গত বছরের নভেম্বরে ১৭৭ মেট্রিক টন গেলেও এ বছরের নভেম্বরে ১০৮ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘করোনায় বিশ্বের কোনো দেশেরই অবস্থা ভালো না, তাই সবজি কম রপ্তানি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে আমাদের সবজি রপ্তানিতেও।’

শাহ আমানত বিমানবন্দরে সবজি রপ্তানিকারক প্রতিনিধি লিটন চৌধুরী বলেন, ‘এবার মার্চ থেকেই কচু, কচুর লতি, কচুর ফুল, শিমের বিচি, আলু থেকে শুরু করে ৫৯ পদের সবজি রপ্তানি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। এছাড়া পটল, ঝিঙে, শসা, তিতকরলা, কাকরোল, বরবটি, শিম, লেবু, জলপাই, সাতকরা ও লাউ পাঠিয়েছি বিভিন্ন দেশে।’

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ নেয়ামুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ফ্লাই দুবাই, এয়ার অ্যারাবিয়া ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্যাসেঞ্জার ফ্লাইটে সবজি পাঠানো হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। করোনার কারণে একটু বিঘ্ন ঘটেছিল। এরপর এখন পুনরায় কিছু কিছু যাচ্ছে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!