৩৬ স্বাস্থ্যকর্মীর বেতন নেই তিন মাস, শুনেই নওফেল দিলেন নগদ তিন লাখ

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় বিশেষায়িত আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য ৩ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। হাসপাতালটিতে অস্থায়ীভাবে চাকরি করা ৩৬ জন কর্মচারীর মধ্যে আট হাজার করে এই টাকা ভাগ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১৩ জুন) খুলশীর হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বির হাতে অস্থায়ী কর্মচারীদের জন্য ৩ লাখ টাকার এই অনুদান তুলে দেন। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এই অনুদান প্রদান করেন তিনি।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি চট্টগ্রাম প্রতিদিন বলেন, ‘প্রশাসনিক জটিলতার কারণে তিন মাস বেতন-ভাতা পাননি জেনারেল হাসপাতালের ৩৬ জন চতুর্থ শ্রেণীর অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী। তাদের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা জেনে নগদ তিন লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয়।’

রোববার (১৪ জুন) থেকে দিনে ১০ জন করে ৪ ধাপে ৩৬ জনের হাতে অনুদানের টাকা তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি এড়াতে এক সাথে সবাই দিতে চাচ্ছি না আমরা। কাল থেকে আমরা টাকাটা বিতরণ শুরু করবো। দিনে ১০ জনকে দেবো। কাল ১০ জন পাবে।’

গত তিন মাস ধরে এ ডেডিকেটেড হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর ৩৬ জন অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মীরা পাননি বেতন-ভাতা। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের সেবা করতে পিছপা হননি কেউই। হাসপাতালের বাজেট বরাদ্দ না থাকায় প্রশাসনিক জটিলতার মারপ্যাঁচে আটকে যায় এ ৩৬ জনের রক্তঝরা পরিশ্রমের দাম। তবে এ বেতন জটের সমাধান করলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

জানা যায়, গত ১১ই জুন জেনারেল হাসপাতালে সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করতে গিয়ে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণীর ৩৬ জন অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মীদের আর্থিক অবস্থার কথা জানতে পারেন। সেই প্রেক্ষিতে নগদ তিন লাখ টাকা অনুদান দেন তিনি।

প্রসঙ্গত গত ১ জুন (সোমবার) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান জেনারেল হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী জীবন আকতার হাসিনা। তিনি করোনা ইউনিটের ফ্লু কর্নারে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। মৃত্যুর পর জানা যায় হাসিনাসহ ৩৬ জনের ৪ মাসের বেতন বকেয়া আছে। এর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তারা।

দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়া হাসপাতালটির এই ৩৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পেয়েছেন ‘অভি এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এর মধ্যে রয়েছেন ৮ জন ওয়ার্ড বয়, ১৩ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ১০ জন আয়া এবং ৫ জন বাবুর্চি।

এসআর/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!