রাউজানে দুই সন্তানের জননীর আত্মহত্যা

রাউজানে দুই সন্তানের জননীর আত্মহত্যা 1রাউজান প্রতিনিধি : রাউজানে সুলতানা আকতার বেবী (২৩) নামের এক গৃহবধু স্বামীর ঘর থেকে পিত্রালয়ে প্রবেশের কয়েক মিনিটের মাথায় আত্মহত্যা করেছেন। সে বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া গ্রামের আনোয়ার চৌধুরীর কন্যা ও পূর্বগুজরা ইউনিয়নের বড় ঠাকুর পাড়ার চতর পাড়া গ্রামের আবু হানিফের দুবাই প্রবাসী পুত্র মো. রুবেলের স্ত্রী।

শুক্রবার রাতে উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের গৌরিসংঙ্কর হাট এলাকার মুছা কলোনীতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে ওই গৃহবধুকে নিয়ে তার শ্বাশুর ও দুই ননদের স্বামী টেক্সিতে করে বাপের বাড়িতে রেখে যেতে এসেছিল। দুই সন্তানের জননী গাড়ি থেকে নেমে সোজা মা-বাবার শয়নকক্ষে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সাথে শাড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। এসময় শ্বাশুর ও দুই ননদের স্বামীকে আদর-আপ্যায়ণে ব্যস্ত ছিল বেবীর পরিবারের সদস্যরা।

বেবীর মা ফরিদা পারভিন মেয়ের আত্মহনন প্রসঙ্গে বলেন, আমি মনে করেছিলাম মেয়ে ঘরে এসে কাপড়-চোপড় বদলাতে ব্যস্ত ছিল, এর মধ্যে বিয়ায় ও সাথে আসা আত্মীয়দের জন্য চা-নাস্তার ব্যবস্থা করছিলাম। পরে আত্মীয়রা চলে গেলে মেয়েকে ওই রুম থেকে ডাকাডাকি করলে কোন সাড়া না পেয়ে পরিবারের সকলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এরপর তার বাবা ঘরের চালের টিন খুলে দেখতে পান মেয়ে পাখার সাথে ঝুলে রয়েছে।

আত্মহত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন আমার মেয়েকে শ্বাশুর পরিবার মানসিকভাবে নির্যাতন করার পর আমার বাড়িতে দিতে এসেছিল। মেয়েকে নিয়ে আসার সময় তার দুই অবুঝ শিশু কেউ সাথে নিয়ে আসেনি। আমার মেয়ে নাতনীকে তেলের গ্ল্যান দিয়ে আঘাত করায় শ্বশুর-শ্বাশুড়ী তাকে গালমন্দ করে। এরপর থেকে মেয়ে তিনদিন অনাহারে ছিল। তার শ্বশুর আমার স্বামীকে (আনোয়ার চৌধুরী) ফোন করে সেখানে যেতে বললে তিনি ব্যস্ততার জন্য যেতে পারেননি। পরে তারা নাতি-নাতনিকে রেখে আমাদের বাসায় পাঠায়। বাসায় আসার সাথে সাথেই রুমে প্রবেশ করে আত্মহত্যা করে। গত ৪/৫ বছর আগে বিয়ে হলেও সম্পর্ক তেমন ভালো ছিলনা বলেও জাানন তিনি।

অপরদিকে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, নিহত বেবী শ্বশুরবাড়িতেই আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তারা বাপের বাড়িতে দিয়ে আসে। এর আগে শ্বশুর বাড়িতে আত্মহত্যা চেষ্টকালে ননদ পারুল আকতার ও শ্বাশুরী কামরুন নাহার রক্ষা করেছিল। সেদিন আত্মহননকারী বেবী বলেছিল আজ বাঁচালেও ভবিষ্যতে? এমন ইঙ্গিত পেয়ে বেবী ও বেবীর পরিবারের ইচ্ছায় তাকে বাপের বাড়িতে পাঠানো হয়। কারো সাথে কোন ধরনের ঝগড়া ছিলনা। নাতিকে তেলের গ্ল্যান দিয়ে আঘাতের প্রতিবাদ করায় শ্বশুর-শ্বাশুরীর সাথে অভিমান করেছিল। তুচ্ছ ঘটনায় আত্মহত্যা করবে তা আমরা ভাবতেও পারছিনা।

এই প্রসঙ্গে পাহাড়তলী ইউনিংয়নের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন বলেন, আত্মহত্যার বিষয়ে খবর পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ রাতে আসতে অপারগতা প্রকাশ করে। সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল দেখে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। এ প্রসঙ্গে নোয়াপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জাবেদ মিয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আত্মহননকারী গৃহবধুর পরিবার থেকে আত্মহননের প্ররোচনার জন্য স্বামী পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে শোনা যাচ্ছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!