মোবাইল রেকর্ডে মিললো পটিয়ার অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু রহস্য

বছরখানেক আগে বিয়ে হয় ২০ বছর বয়সী মুর্শিদা বেগমের। কিন্তু সংসারে স্বামী রফিকের সঙ্গে বনিবনা ছিল না মুর্শিদার। নানা বিষয়ে দ্বন্দ্ব ছিল তাদের। ঘরের আশপাশের লোকজনও জানতো বিষয়টি। কয়েকদিন ধরে স্বামী রফিক দাবি করছিল তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুর্শিদার উপর জ্বিনের প্রভাব রয়েছে।

গত শনিবার (২৫ এপ্রিল) পটিয়ার দক্ষিণ আশিয়া কমলা পাড়ার এই গৃহবধু মুর্শিদা বেগম মারা যান। ‘জ্বিনের আসরে’ তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে পারিবারিকভাবে দাফন করার আয়োজনও করেন তার স্বামী মো. রফিক।

কিন্তু এ মৃত্যু যে জ্বিন ঘটায়নি তা উঠে এলো ঘটনার ৫ দিন পর। পাশের ঘরের এক নারী উল্টে দিলেন মো. রফিকের বানানো ‘জ্বিন কাহিনী’। ওই নারী ২৫ এপ্রিল রাতেই আওয়াজ শুনে বুঝতে পেরেছিলেন মুর্শিদাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তার স্বামী।

বিষয়টি তিনি ওই বাড়ির একজনের সঙ্গে আলাপ করেন। যার সঙ্গে আলাপ করেছিলেন তিনি তার কথাগুলো মোবাইলে রেকর্ড করেন। মুর্শিদার মৃত্যুর ‘আসল’ রহস্যের এ রেকর্ড পটিয়া থানার কাছে পৌঁছাতে সময় লেগে যায় ৫ দিন। ঘটনার ৫ দিন পর জানা গেল কথিত জ্বিনের আসরে নয়, মুর্শিদা খুন হন স্বামীর হাতেই।

পটিয়া থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) আটক করে স্বামী মো. রফিকসহ তার ৩ সহযোগীকে।

হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই স্ত্রীর উপর জ্বিনের প্রভাবের গল্প সাজিয়েছিলেন ঘাতক স্বামী মো. রফিক।

মুর্শিদার স্বামীর বাড়ির প্রতিবেশী মো. সাজ্জাদ জানান, পাশের বাসার এক মহিলা জানতেন মুর্শিদাকে স্বামীসহ তিনজন গলা টিপে হত্যা করে। তিনি বিষয়টি আরেকজনকে বলেছিলেন। ওই ব্যক্তি মহিলার কথা রেকর্ড করে নেন। শ্বাসরোধ করে মুর্শিদাকে হত্যার বিষয়টি এই মোবাইল রেকর্ড থেকেই বেরিয়ে আসে। একজন, দুই জন করে বিষয়টি স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির কানে যায়। তিনি বিষয়টি থানাকে অবহিত করেন।

তিনি আর বলেন, মুর্শিদা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। কয়েকদিন পর সন্তান জন্মদানের কথা ছিল তার।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বোরহান উদ্দিন এ বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ ঘটনায় স্বামী রফিক, মজ্জল হোসেন, রাহেনা নামের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। নিহত মহিলার বোনের অভিযোগ তাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। এ সুত্র ধরে কাজ করছে পুলিশ।’

এএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!