মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক রইসুল হক বাহারের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর)। একাত্তরের এই গেরিলাযোদ্ধা ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
কৈবল্যধাম যুদ্ধের নেতা রইসুল হক বাহার দীর্ঘ ৪৬ বছর সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালের ১ এপ্রিল নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার চরকাকড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র খালাস করতে আসা ‘সোয়াত’ জাহাজ অবরোধে নিউমুরিং এলাকার জনগণকে সংগঠিত করার কাজে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রইসুল হক বাহার।
রইসুল হক বাহার ১৯৭১ সালে ভারতের হাফলং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। গেরিলা কমান্ডার বাহার ছিলেন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। চট্টগ্রামের কৈবল্যধাম রেলস্টেশন অভিযান তার নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। ১৯৭২ সালে ‘দৈনিক সেবক’ পত্রিকার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেছিলেন। এরপর তিনি ‘দৈনিক গণকণ্ঠ’ ও ‘দৈনিক পূর্বকোণ’ পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি ‘সুপ্রভাত বাংলাদেশ’র বার্তা সম্পাদক ছিলেন। চট্টগ্রামের ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য পিপলস ভিউ’ এবং জাতীয় দৈনিক ‘ডেইলি সান’র বার্তা সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ‘ডেইলি স্টার’ চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন (২০১০-২০১৫)। এরপর আবার ‘সুপ্রভাত বাংলাদেশ’ পত্রিকায় যোগ দেন। শেষ সময়ে ছিলেন ‘দৈনিক পূর্বকোণের সহযোগী সম্পাদক এবং ফুলকি স্কুলের নির্বাহী সচিব।
‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর’ বইয়ের সম্পাদনা করেন রইসুল হক বাহার। এ ছাড়া ‘পশ্চিম পাকিস্তানের শেষ রাজা’ বইয়ের অনুবাদও করেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে ছোটদের জন্য একটি পুস্তিকা রচনা করেন ইংরেজিতে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের প্রকাশনা ‘স্মরণিকা’ সম্পাদনা করেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভ প্রতিষ্ঠায় মূল ভূমিকায় ছিলেন রইসুল হক বাহার।
সিপি