মামলায় মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে বৃদ্ধকে হয়রানির অভিযোগ বোয়ালখালীতে

কোনো তদন্ত না করে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় মনগড়া প্রতিবেদন দিয়ে এক বৃদ্ধকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে স্থানীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী মনছফ আলী (৭০) এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মনছফ আলী বলেন, ২০১৪ সালে তার ছেলে প্রবাসী মেসকাত উদ্দিনের সঙ্গে একই গ্রামের মো. সোলাইমানের মেয়ে ইয়াছমিন আকতারের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় পারিবারিক ও সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ইতোমধ্যে তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তার ছেলের বউ ইয়াছমিন আকতার তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। দিন দিন তার চলাফেরা আচার-আচারণ বেপরোয়া হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি তার স্বামী মেসকাত উদ্দিন বাজারে গেলে কাউকে কিছু না বলে ইয়ামিন তার বাবা-ভাইকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যায়। পরের দিন আমি (মনছফ আলী) থানায় সাধারণ ডায়রি করি।

তিনি আরও বলেন, ৭ মার্চ তার ছেলে মেসকাত প্রবাস থেকে স্ত্রী ইয়াছমিনকে তালাক দেন। যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। তালাক দেওয়ার পর ইয়াছমিন আকতার বাদী হয়ে ২৪ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য বোয়ালখালী সমাজসেবা কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। কিন্তু উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন কোনো কিছু যাচাই-বাচাই না করে টাকার বিনিময়ে আদালতে মামলাটির মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তার দেওয়া প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে মিথ্যা মামলায় এ বৃদ্ধকে কারাবাস করতে হয়। তাই তিনি ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন।

তিনি বলেন, তারা গত (৭ জুলাই) বিকেলে বাকলিয়া মিয়াখাঁন নগর এলাকা থেকে সাইফুল ও জামালসহ ৮/৯জন লোক আমাকে মারধর করে জোরপূর্বক গাড়িতে করে বোয়ালখালী থানায় নিয়ে আসে। গাড়িতে থাকাবস্থায় আমাকে হত্যার হুমকিও দেয়। ১৭ জুলাই আমি আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হই।

সংবাদ সম্মেলনে মনছফ আলী সমাজসেবা কর্মকর্তার দেয়া প্রতিবেদনের পূর্ণ তদন্ত দাবী করে সত্য ঘটনাটি উদঘাটনের জোর দাবী জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মনছফ আলীর মেয়ে রাশেদা আকতার, সুলতানা রাজিয়া, মেয়ের জামাই মো. পারভেজসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলার শহীদ মিনার চত্বরে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি স্মরকলিপি প্রদান করেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে বোয়ালখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‌‘আদালতের নির্দেশে আমি মামলাটি তদন্ত করি। তদন্তে যা পেয়েছি তা প্রতিবেদন দিয়েছি।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!