বঙ্গোপসাগরের বোটে শুরু ৭ জনের কোয়ারেন্টাইন

করোনার উপসর্গ নিয়ে মধ্যসাগরে মাঝির মৃত্যু

বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে চলতে চলতেই বোটের মাঝি আক্রান্ত হন জ্বরে, সঙ্গে তীব্র শ্বাসকষ্টও। শুক্রবার (১০ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মাঝি মোহাম্মদ দিদার। হাতিয়া উপকূলের কাছাকাছি তখন বোটটি। মাঝি থেকে খালাসি সবার বাড়িই সন্দ্বীপ উপজেলায়। ততোক্ষণে খবর চলে যায় সন্দ্বীপের মূল ভূখণ্ডে। মুহূর্তেই জেগে ওঠে এলাকার লোক, ছুটে আসে প্রশাসনের কর্তারা। বোটটি যেন কোনোভাবেই ডাঙ্গার কাছাকাছি আসতে না পারে সেজন্য সন্দ্বীপের বাংলাবাজার ঘাটে পাহারা বসায় প্রশাসন। অগত্যা জীবিত ৭ খালাসি তাদের মাঝির লাশ নিয়ে ভাসতে থাকে বঙ্গোপসাগরে। এভাবে ১২ ঘন্টা ধরে ভাসতেই থাকে।

ওই বোটের খালাসি মামুন বলেন, ‘চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে লবণ দিয়ে তারা খুলনা গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে হাতিয়ার উপকূলের কাছাকাছি (শুক্রবার) রাত আড়াইটায় মারা যান মাঝি মোহাম্মদ দিদার। লাশ নিয়ে সন্দ্বীপে বোট ভেড়ানোর চেষ্টা করলে প্রশাসন বাধা দেয়। আমরা লাশ নিয়ে প্রায় ১২ ঘন্টা ভাসতে থাকি।’

বঙ্গোপসাগরের বোটে শুরু ৭ জনের কোয়ারেন্টাইন 1

শুরুতে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ছিল মাঝির লাশসহ বোটের মাঝিদের সন্দ্বীপ উপকূলে ভিড়তে না দিয়ে চট্টগ্রামের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পরে শনিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে প্রশাসন। এরপর মাঝির লাশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) পাঠানো হয়।

সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলুল করিম বলেন, ‘করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া মাঝিসহ সবাইকে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে সন্দ্বীপের নিজ বাড়িতে দাফনের পাশাপাশি তার নমুনা সংগ্রহ করে ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিআইটিআইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য মাঝিদের বোটে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।’

বোটের খালাসি মামুন বলেন, ‘প্রশাসন এখন বলছে লাশ দাফন করে আমাদের সবাইকে সাগরেই থাকতে হবে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!