পাঁজরের সব হাড় ভেঙে গেছে শারমিনের, স্ত্রীকে বাঁচাতে স্বামীর আকুতি

ভালোবেসে বিয়ে করেন মাহাতির মোহাম্মদ ও শারমিন আক্তার চৌধুরী। পরিবার ছেড়ে গড়েন সুখের সংসার। দু’বছর বয়সের একটি ফুটফুটে কন্যাসন্তানও আছে তাদের। ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করেন মাহাতির, সুখে সংসার করছিলেন তারা। কিন্তু বেপরোয়া এক গাড়ির ধাক্কা কেড়ে নিয়েছে তাদের সুখ। শারমিন এখন এভার কেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এদিকে সবকিছুর বিনিময়ে স্ত্রীকে বাঁচাতে চান মাহাতির। বউকে বাঁচিয়ে হুইলচেয়ারে বসিয়ে হলেও নিজের কাছে রাখতে চান তিনি।

এদিকে মোটরসাইকেল চড়ে কক্সবাজার গিয়েছিলেন মাহাতির-শারমিন দম্পতি। গত শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সেখান থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় একটি বেপরোয়া বাস পেছন থেকে তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। মাহাতির অল্প আহত হলেও স্ত্রী শারমিনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়। সেদিন থেকেই এভার কেয়ার হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শারমিন।

জানা গেছে, শারমিনের সবকটি পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। কোমড়ের হাঁড় আলাদা হয়ে গেছে শরীর থেকে। থেতলে গেছে কোমরের নিচের অংশের নার্ভ। একটি ফুসফুসের কাজ করছে না, অন্যটি কিছুটা কাজ করলেও কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকটি অস্ত্রোপচারও হয়েছে তার শরীরে।

তবে শারমিনকে এ অবস্থা থেকে হুইলচেয়ারে ফেরানোর সম্ভাবনা জানিয়েছেন ডাক্তার আনিসুল ইসলাম।

শারমিনকে বাঁচাতে মাহাতির নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত। গত পাঁচদিনে প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা হাসপাতালের বিল দিয়েছেন তিনি। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত সাত লাখ টাকা বিল এসেছে এভার কেয়ার হাসপাতালে। তেমন কোনো অর্থ নিজের কাছে জমা না থাকায় ও পারিবারিক সহযোগিতা না পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ডেস্পারেটলি সিকিং চট্টগ্রাম’ নামে একটি গ্রুপে মানবিক সাহায্য চেয়েছেন মাহাতির।

মাহাতির মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি নিজের সর্বস্ব দিয়ে আমার বউকে ঘরে ফেরাতে চাই। বউকে বাঁচিয়ে নিজের কাছে রাখতে চাই, হোক সেটা হুইলচেয়ারে।

সবার কাছে সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন মাহাতির মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার টাকা সহযোগিতা পেয়েছি। যারা সহযোগিতা করতে চান তারা ওয়ান ব্যাংক জিইসি শাখার হিসাব নম্বর- ০৩৪২০৫০০২৪০৪৯ এ সহযোগিতা পাঠাতে পারেন। এছাড়া বিকাশ নম্বর ০১৮৭০-২৬৭৭০৬-এও সহযোগিতা পাঠাতে পারবেন।

মাহাতির মোহাম্মদ চট্টগ্রাম নগরের পুরান চান্দগাঁও হাজেরা-তজু কলেজের পেছনে নুরুজ্জামান নাজির বাড়ির বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে একই থানা এলাকার খাজা রোডে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!