নির্বাচন আসলেই কূটনীতিকদের আগ্রহ বেড়ে যায়: তথ্যমন্ত্রী

নির্বাচন আসলে শুধু বাংলাদেশেই বিদেশি কূটনীতিকদের আগ্রহ বেড়ে যায় অভিযোগ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, ‘আমাদের পাশের দেশ ভারতে যখন জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হয়, তখন তো সেখানে কূটনীতিকরা কথা বলেন না। অন্যান্য দেশে যখন নির্বাচন হয়, তখনো বলেন না। শুধু আমাদের দেশে দেখতে পায়, নির্বাচন এলেই বিদেশি কূটনীতিকদের আগ্রহ বেড়ে যায়।’

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় ইডেন ইংলিশ স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন নিয়ে কূটনীতিকরা যেভাবে কথা বলছেন তাতে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘিত হয়েছে। এই নির্বাচন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিদেশি কূটনীতিকরা যেভাবে বিভিন্ন প্রার্থীর বাড়িতে গেছেন, সেটা কোনোভাবেই সমীচীন হয়নি। কোনো প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে তাকে সহানুভূতি জানানো বিদেশি কূটনীতিকের কাজ নয়।’

নির্বাচনে কূটনীতিকদের নাক গলানোর জন্য বিএনপিকে দায়ী করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু হলেই বিএনপি কূটনীতিকদের ডেকে নালিশ করে। নালিশ করবে জনগণের কাছে, দেশের ভোটারের কাছে অথচ তারা করে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে। এটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়।’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ কার্ড দিয়েছে এবং সেখানে আবার ২৮ জন বাংলাদেশি অর্থাৎ বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী। নির্বাচন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করবেন, কিন্তু এখানে কোন বিদেশি পর্যবেক্ষককে না দিয়ে কূটনীতিকদের কেন দেওয়া হল? এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিল।’

এদিকে অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শিক্ষার প্রথম ধাপ ‘প্রাথমিক শিক্ষার’ ভিত্তি মজবুত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ‘জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়া এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে অন্যতম ভিত্তি। কাজেই প্রাথমিক শিক্ষায় এমন ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে যাতে করে আজকের শিশুরা আগামী-দিনের যোগ্য নাগরিক হওয়ার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে পারে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন,‘আজকের শিশুরাই ভবিষ্যতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা সরকারি বড় অফিসার হবে। কিন্তু এসব হয়ে যেন তাদের দরজা দুস্থ ও অসহায় মানুষের জন্য বন্ধ হয়ে না যায় এবং তাদের বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয়, সেব্যাপারে তাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।’

ড. হাছান বলেন, ‘ইডেন ইংলিশ স্কুলের শিক্ষার্থীদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে,যাতে করে তারা পশ্চিমা সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ না করে। তারা যেন বাঙালি ও দেশীয় সংস্কৃতির অনুকরণ, অনুসরণ করে। হিন্দী কিংবা ইংরেজি গান নয়, তারা যেন রবীন্দ্র, নজরুল এবং দেশাত্মবোধক গানে আগ্রহী হয়ে উঠে,সেভাবেই তাদের গড়ে তুলতে হবে।’

কোলাহলমুক্ত মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠা ব্যতিক্রমধর্মী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রীর ‘মা’ প্রফেসর এডভোকেট কামরুন নাহার বেগম। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মো. খালেদ মাহমুদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম, হাটহাজারি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম, চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ তাহসিন খান ও ইডেন ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষ মাহানুর তাসনিম মিলি।

তথ্যমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে স্কুলের কৃতী শিক্ষার্থী এবং উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্র্রধানদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা তুলে দেন।

এডি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!