নন্দনকানন ইসকনের উল্টো রথযাত্রা উদযাপন

‘জাতিগত বিদ্বেষ, হিংসা, হানাহানি, ধর্মীয় উন্মাদনায় সারা বিশ্ব আজ যখন বিভ্রান্ত মানবতা ভুলণ্ঠিত তখন রথযাত্রা উৎসব বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বর্তমান সরকার কাউকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেওয়া মেনে নেবে না। জনগণ যার যার ধর্ম পালন করবে। কেউ যদি তার ধর্ম পালন করতে না চায়, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অধিকার তার নেই। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। নিজ ধর্মের পাশাপাশি অন্যের ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে, এটাই বাস্তবতা। নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করলে হবে না। জাতির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সব সম্প্রদায়ের অসামান্য অবদান রয়েছে।’

শুক্রবার (৮ জুলাই) নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির ও গৌর নিতাই আশ্রম প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল একথা বলেন।

উল্টো রথযাত্রার শোভাযাত্রা শ্রীশ্রী গৌর নিতাই আশ্রম সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দিরে এসে শেষ হয়।

ইসকনের রথযাত্রার ২৫ বর্ষপূর্তির আয়োজনে উল্টো রথযাত্রায় আশির্বাদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসকন হেডকোয়ার্টার ভারতের মায়াপুরের শ্রীমৎ অমিয় বিলাস স্বামী মহারাজ।

নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ পণ্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে ও সুমন চৌধুরীর সঞ্চালনায় উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

সাবেক মেয়র বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পালন করে আসছে। কাউকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেওয়া হবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করেছিলেন।’

‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব ধর্মের উৎসব সকলে মিলে আনন্দ করে উদযাপন করি। আগামীদিনে সব ধর্মের পারস্পরিক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হবে।’

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তারণ নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারী। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম মেম্বার ড. জিনবোদি ভিক্ষু।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ইসকনের বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি উত্তম শর্মা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরী, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু, কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, প্রকৌশলী আশুতোষ দাশ, মহিলা কাউন্সিলর নিলু নাগ, রুমকি সেনগুপ্ত, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক বনগোপাল চৌধুরী, কোতোয়ালী থানা পূজা কমিটির সভাপতি লিটন শীল, অনিন্দ্য দেব।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইসকন মোহরা মন্দির অধ্যক্ষ সর্বমঙ্গল গৌর দাস ব্রহ্মচারী, নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সহসভাপতি অকিঞ্চন গৌর দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, বলরাম করুণা দাস, সুবল সখা দাস ব্রহ্মচারী, শেষরূপ দাস ব্রহ্মচারী, অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!