চোরের মোবাইলে টাকা পাঠিয়ে শিশু উদ্ধার করল পুলিশ, গ্রেপ্তার ২

এক লাখ টাকা দিতে হবে, না হয় মেয়েকে আর পাবে না—মুঠোফোনে দুই বছরের অপহৃত শিশু আয়েশার মা বিলকিসকে এভাবেই হুমকি দেন অপহরণকারী মো. হেলাল। কিন্তু দু’দফায় নগদ নম্বরে ৮ হাজার টাকা পাঠানোর পর বাচ্চাটি ফেরত দেন তিনি। তবে এতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার, ধরা পড়েন পুলিশের হাতে।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার নিমতলা এলাকা থেকে মো. হেলালকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি অপহৃত শিশুটির বাবার বন্ধু বলে জানা গেছে।

হেলাল ভোলা জেলার সদর থানার চর চটকিমারা এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর ইপিজেড এলাকা থেকে হেলালের সহযোগী মো. ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, বিলকিসের স্বামী ভোলা জেলায় তাদের গ্রামের বাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। হেলালের বাড়িও ভোলা জেলায় একই গ্রামে। বিলকিসের স্বামীর বন্ধু হেলাল। বন্দর থানার মাইলের মাথা এলাকায় একটি কলোনিতে পোশাককর্মী বিলকিস তিন সন্তান নিয়ে থাকেন। তার দুই ছেলে, এক মেয়ে। গত বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হেলাল বিলকিসের বাসায় যান। বিলকিস তখন চাকরিতে ছিলেন। বাসায় তিন সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান শামীম (১৪) বাইরে হাঁটতে বের হয়।

এরপর অপর সন্তান রবিউলকে (৮) ২০ টাকা দিয়ে দই কিনতে পাঠান হেলাল। রবিউল বের হওয়ার পর আয়েশাকে নিয়ে চলে যান তিনি। রবিউল বাসায় ফিরে বোনকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার মাকে জানায়। ওই রাতেই বিলকিস থানায় গিয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।

বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কিশোর মজুমদার জানান, ইব্রাহিম ও হেলাল মিলে শিশুটিকে চুরি করে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ইব্রাহিমের স্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এছাড়া শিশুটি মায়ের বুকের দুধ ছাড়া আর কিছু না খাওয়ায় তাকে হেফাজতে রাখা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। শেষ পর্যন্ত বিক্রির পরিকল্পনা বাদ দিয়ে শিশুর মায়ের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয় তারা।

তিনি আরও জানান, গত বুধবার ভোর রাত পৌনে ৪টার দিকে বিলকিসের মোবাইলে একটি কল আসে। সেখানে মেয়েকে মুক্তি দেওয়ার জন্য এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। কলদাতা ইব্রাহিমকে শনাক্ত করে বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে আমরা বিলকিসের মাধ্যমে মুক্তিপণের আলোচনা চালিয়ে যেতে থাকি। শিশুটির যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা বিকাশে ৮ হাজার টাকা পাঠাই। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে একজন অটোরিকশা চালকের মাধ্যমে শিশুটিকে সল্টগোলা এলাকায় পাঠানো হয়। বিলকিসসহ আমরা শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় গ্রহণ করি।

গ্রেপ্তার দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এসআই কিশোর।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!