চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্পের অনিয়ম তদন্তে দুদক

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ইনস্টলেশন অব জিআইপি পুল (বৈদ্যুতিক খুঁটি) অ্যান্ড এলইডি লাইট ওয়েরিং প্রকল্পের প্রায় ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ আর্থিক অনিয়মের তদন্ত অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে বিদ্যুৎ এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট প্রায় টানা ৪ ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান পরিালনা করেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, গণমাধ্যমে জাইকার অর্থায়নে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ইনস্টলেশন অব জিআইপি পুল (বৈদ্যুতিক খুঁটি) অ্যান্ড এলইডি লাইট ওয়েরিং প্রকল্পের প্রায় ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্পের বিষয়ে নানা অনিয়ম ও লুটপাটের তথ্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সেই সূত্র ধরেই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

দুদক অভিযানে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ। তিনি মূলত এই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন।

দুদক আরও জানায়, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রকেল্পের মূল কাগজপত্রাদি পাওয়া যায়নি। এসব কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে প্রকল্পের জন্য কেনা সামগ্রীর, আয়-ব্যয় সমস্ত কাগজপত্র ওই দপ্তরে ছিল না।’

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর সড়কে ইনস্টলেশন অব জিআই পুল (বৈদ্যুতিক খুঁটি) অ্যান্ড এলইডি লাইট ওয়েরিংয়ের জন্য প্রায় এক বছর মেয়াদে মোট ৪৮ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর দরপত্র খোলা হয়। সেখানে চারটি দরপত্রে ১৫-১৭ শতাংশ ছাড় দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয় ‘অমনি পাওয়ার লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে সে দরপত্র বাতিল করেন।

এরপর ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দরপত্রটি খোলা হয়। সেখানে চারটি দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা হয় ‘এসটিএমএস’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই সময় দু’বারের দরপত্রে অংশ নেওয়া আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল এসপিএল ও জেএসএম (জেবি), প্রোপ্রার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেড, এনার্জি প্যাক ইলিক্ট্রনিক লিমিটেড ও ইস্ট অ্যান্ড ইলিক্ট্রনিক লিমিটেড।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক কর্মকর্তা মো. এনামুল হক।

তিনি বলেন, এই প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন বরাবরে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এমএ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!