নগরের হালিশহরে রুমমেটকে খুনের দায়ে মো. হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডসহ আর্থিক জরিমানা করেছে চট্টগ্রামের একটি আদালত।
বুধবার (৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনিরা এই রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের অতিরিক্ত পিপি দীর্ঘতম বড়ুয়া। তিনি বলেন, সন্দ্বীপের রহমতপুর আদিক্কার বাড়ির মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. হোসেনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায় ছয় মাসের কারদণ্ড দেন। অন্যদিকে দন্ডবিধির ৩৮০ ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জামিনে গিয়ে পলাতক থাকায় আসামির অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ মার্চ মধ্য রাত তিনটার দিকে হালিশহর বি-ব্লকের ২০ নম্বর লেইন দুই নম্বর রোডের তিন নম্বর বাড়ির একটি ব্যাচেলর বাসায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর এলাকার এক চায়ের দোকানে চা পান করতে গিয়ে নিহত মাকসুদুর রহমান মাকসুদ ও দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. হোসেনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। সেই সময় তাদের এক সিনিয়র ভাই বিষয় মীমাংসা করে দেন। কিন্তু হোসেন মনে মনে সেই রাগ পোষণ করে রাখেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন মধ্যরাতে মাকসুদের মোবাইল নিতে গেলে হোসেনকে মোবাইল নিতে নিষেধ করেন মাকসুদ। সেই সময় মাকসুদের বুকে ছুরিকাঘাত করে মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায় হোসেন। পরে অন্য রুমমেটরা মাকসুদকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই রিপন বাদী হয়ে হালিশহর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে একই বছরের ৩০ এপ্রিল হোসেনকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগ পত্র দেন হালিশহর থানার এসআই সোহেল রানা। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ছুরিকাঘাতে নিহতের বুকের তিন ইঞ্চি গভীরে ক্ষত হয়। এর ফলে তার মৃত্যু হয়।
একই বছরের ৮ নভেম্বর আদালত দণ্ডবিধির ৩০২, ৩৮০ ও ৪১১ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেন। অভিযোগ পত্রের ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
আরএস/এমএহক