নারীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় রেল কর্মচারীর মাথায় কোপ, স্টেশন ভাঙচুর

মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় চকরিয়া রেলস্টেশনে হামলা করেছে দূর্বৃত্তরা। এসময় হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে পাঁচ রেল কর্মচারী আহত হন। এদের মধ্যে একজনের মাথায় দায়ের কোপ পড়ায় তাকে সাত সেলাই করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঘটনার পর থেকে স্টেশনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহতরা হলেন সহকারী স্টেশন মাস্টার এসএম কাইয়ুম, পয়েন্টসম্যান ইকরাম, নজরুল, শরীফ ও মারুফ। এদের মধ্যে ইকরামের মাথায় দা’র কোপ পড়েছে। তার মাথায় সাত সেলাই হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারগামী স্পেশাল ট্রেনটি চকরিয়া স্টেশনে থামার পর মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা যাত্রী সেখানে নামেন। মহিলাটিকে স্টেশনের উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত কয়েককজন শ্রমিক (স্থানীয় বাসিন্দা) উত্যক্ত করছিল। এ সময় সহকারী স্টেশন মাস্টার ও কর্মচারীরা তাদের বাধা দেন। এতে উত্ত্যক্তকারীরা ক্ষেপে গিয়ে গালিগালাজ করেন।

পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় ২০-৩০ জন মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্টেশন কর্মচারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা স্টেশনে ভাঙচুর করেন। হামলায় পয়েন্টসম্যান ইকরামের মাথায় দায়ের কোপ লাগে। এছাড়া সহকারী স্টেশন মাস্টার এসএম কাইয়ুম এবং পয়েন্টসম্যান নজরুল, শরিফ ও মারুফ আহত হন।

খবর পেয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আহত ইকরামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় তার মাথায় সাতটি সেলাই দেওয়া হয়। বর্তমানে স্টেশন কর্মচারীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে স্টেশনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

সহকারী স্টেশন মাস্টার এসএম কাইয়ুম বলেন, স্টেশনে একজন মহিলাকে মিস্ত্রিরা বাজেভাবে উত্যক্ত করছিল। এটা দেখে আমিসহ স্টেশন কর্মচারীরা বাধা দিই। এতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় ২০-৩০ জন লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হমলা করে। এতে একজনের মাথায় দায়ের কোপ লেগে গুরুতর আহত হন। পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান এসএম কাইয়ুম।

আহত ইকরাম বলেন, ‘একজন নারীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর হামলা হয়। আমার মাথায় দায়ের কোপ লেগেছে, সাতটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘স্টেশন কর্মচারীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। এসময় থানা পুলিশও ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। স্টেশনে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চকরিয়া স্টেশন কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার পর স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।’

সিএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!