চট্টগ্রামে ত্রাণ নিয়ে নোংরা রাজনীতি, আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে চিকিৎসকদের মধ্যেও

মতবিনিময় সভায় নওফেলের অভিযোগ

চট্টগ্রামে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমকে ঘিরে কেউ কেউ ন্যাক্কারজনক ও নোংরা রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। পাশাপাশি পেশাজীবী এক নেতা চিকিৎসকদের আতঙ্কিত করে চলেছেন বলেও অভিযোগ তার। পরিস্থিতি মোকাবেলায় এসব পরিহার করে সমন্বিতভাবে কাজ এগিয়ে নেয়ার আহবানও জানান তিনি।

বুধবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রামের ডিসি ও সিভিল সার্জনের সাথে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী।

কেউ কেউ নিজেদের আত্মপ্রচার করতে গিয়ে দল ও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে— এমন অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে কাজ করার জন্য একটা নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের নেতৃবৃন্দ যার যার এলাকায় তার তার মত করে সবাই ত্রাণ দিচ্ছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যারা আমরা বেশি শোডাউন করছি বা ছবি তুলছি তারাই শুধু আছি আর বাকিরা কই গেছি কি করছি এমন একটা ন্যাক্কারজনক একটা আলোচনা শুরু হয়েছে।’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের প্রেক্ষাপটেই এসব আলোচনা করা হচ্ছে দাবি করে উপমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামে নিবার্চন আসন্ন সেটাকে মাথায় রেখে এই আলোচনাগুলো এনে একটা নোংরা রাজনীতি করা চেষ্টা করা হচ্ছে।

এসব আলোচনায় সরকারি ত্রাণ ও ব্যক্তিগত ত্রাণকে এককাতারে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে উল্লেখ করে উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখানে সরকারের যে প্রক্রিয়া সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। আমি একজন সংসদ সদস্য ও অন্যান্য সাংসদরা যারা দিচ্ছি আমরা নিজের থেকে দিচ্ছি। এখন যদি আমাদেরকে বলা হয় আমরা কয়টা দিলাম তার হিসাব চায়, আর সরকারের ত্রাণ নিয়ে কী দিচ্ছেন না দিচ্ছেন সেটার হিসাবের সাথে মেলানো হয়। তাহলে এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক একটা আলোচনা এবং অত্যন্ত নোংরা রাজনীতির একটা প্রক্রিয়া।’

ত্রাণ বিতরণে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনার কথা তুলে ধরে নওফেল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটা হলো সারাদেশে ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগিতা সংগঠনের সমন্বয়ে ত্রাণ কমিটি গঠন করতে হবে। তারা ওয়ার্ড পর্যায়ে দলমত নির্বিশেষে প্রকৃতি দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের তালিকা প্রস্তুত করে সেই তালিকা স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করবেন। আওয়ামী লীগের এই ত্রাণ কমিটি করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত থেকে রক্ষা পেতে জনগণকে সতর্ক করবে এবং মানবিক সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়াবে।’

এসময় চট্টগ্রামে ত্রাণ বিতরণের বিষয়ে কোন তথ্য না পাওয়ার অভিযোগ পুনরায় তুলেন উপমন্ত্রী।

ত্রাণ নিয়ে চট্টগ্রামের এই অপরাজনীতি থামাতে দ্রুত ত্রাণ কমিটি করাকেই সমাধান দাবি করে উপমন্ত্রী বলেন, ‘এখন জরুরি ভিত্তিতে এই কমিটিটা করে ফেলতে পারলে যারা অপরাজনীতি করার জন্য সুযোগ খুঁজছে, সরকারের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধারের কথা বলছে তাদের সে সুযোগ আর থাকবে না।’

চট্টগ্রামে ত্রাণ নিয়ে নোংরা রাজনীতি, আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে চিকিৎসকদের মধ্যেও 1

পেশাজীবি নেতাদের কেউ কেউ চিকিৎসকদের আতংকিত করছেন দাবি করে নওফেল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর চেয়ে ভালো প্রস্তুতি আমাদের দেশে নেওয়া হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার অনেক বেশি প্রস্তুত। কিন্তু আমরা দেখেছি আমাদের দলেরও কিছু নামধারী ব্যক্তি ‘সরকার এটা দিচ্ছে না ওটা দিচ্ছে না’ বলে বেড়াচ্ছে। আমাদের আরো সাবধান হওয়া উচিত আমাদের সরকারকে যাতে আমরা এভাবে আক্রমণ না করি। আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। আমাদের সমন্বয়ের কথা বলতে হবে। কিন্তু কিছু ব্যক্তি দলের পদপদবিতে থাকা সত্বেও বিশেষ করে পেশাজীবি একটা দল বা নেতা বলে নিজেকে পরিচিত করা একজন ব্যক্তি বেশি বলছেন। একজন চিকিৎসক যদি আমাদের ভাইদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। তাহলে পরিস্থিতি মোকাবেলা কঠিন হবে।’

এআরটি/আরএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!