চট্টগ্রামে চীনা কোম্পানি বড় কাজ পেল দরপত্র ছাড়াই

ইকোনমিক জোনের অবকাঠামো নির্মাণ

দরপত্র ছাড়াই চট্টগ্রামে নির্মীয়মাণ চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চলের কাজ পেল চীনা কোম্পানি চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি)। দরপত্র এড়িয়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চীনা এই কোম্পানিকে ওই শিল্পাঞ্চলে অবকাঠামো নির্মাণের সব কাজ দিতে সম্মতি প্রকাশ করেছে সরকার।

বুধবার (১৬ আগস্ট) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর পূর্ব তীরে আনোয়ারা উপজেলার বেলচূড়া এলাকায় চীনা এই অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল নির্মিত হচ্ছে। সরকার থেকে সরকার পর্যায়ের উদ্যোগে ৭৮৪ একর জমির ওপর এই অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে আগামী অক্টোবরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বঙ্গবন্ধু টানেল থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে চীনা এই অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল অবস্থিত। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯ কিলোমিটার, শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার এবং শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ৪৬ কিলোমিটার দূরে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল অবস্থিত।

এ শিল্পাঞ্চলে ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, রাসায়নিক পণ্য, স্বাস্থ্য সরঞ্জাম, প্লাস্টিক পণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, ফার্নেস, সিমেন্টসহ প্রায় ৪০০ কারখানা স্থাপনের সুযোগ থাকছে।

গত বছরের ১১ আগস্ট আনোয়ারার ওই ৭৮৩ একর জমির ওপর ‘চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন’ স্থাপনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে চীনের চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন।

২০০৯ সালে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনায় হাত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি, বেসরকারি, জিটুজি ও বিদেশি অর্থনৈতিক অঞ্চল মিলিয়ে ইতোমধ্যেই ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান চিহ্নিতকরণ শেষ হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরকালে চীনা সরকার বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্পাঞ্চল স্থাপনের আগ্রহ ব্যক্ত করে। ওই সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর দুই বছর পর ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ঢাকা সফরে এলে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

এ সময় ঠিক হয় অর্থনৈতিক অঞ্চলটির অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করবে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু দীর্ঘদিনেও বেজার সঙ্গে চায়না হারবারের কোনো চূড়ান্ত চুক্তি না হওয়ায় অর্থনৈতিক অঞ্চলটির কোনো কাজ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় আট বছর পর চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলটি স্থাপনে চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করে বেজা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!