উপকূল থেকে নিরাপদ অবস্থানে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের মাইকিং

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের জরুরি বৈঠক

শক্তিশালী হয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে চার নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানো হযেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি শুরু করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

উপকূলীয় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। সৈকত সংলগ্ন এলাকা থেকে মানুষ যাতে আগেই নিরাপদ অবস্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় বৈঠক করা হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উপকূল এলাকা থেকে মানুষ যাতে সরে যায় সেজন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানকে কেন্দ্র করে আবহাওয়া অফিস ৪ নম্বর বিপদ সংকেত ঘোষণা করেছে। তবে এ বিপদ সংকেত সন্ধ্যার দিকে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

দুপুর ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় ৪ নম্বর সংকেত রয়েছে। তবে সন্ধ্যার দিকে এ সংকেত বাড়তে পারে। নৌযানসহ বড় বড় জাহাজগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে থাকার জন্য বলা হচ্ছে। এছাড়া মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। সেই সাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতেও বলা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বেশ কিছু নির্দেশনাও জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর চ্যানেলে অবস্থানরত লোকাল জাহাজ ও ছোট ছোট নৌযানগুলোকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর উজানে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইভাবে বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত জাহাজগুলোর ইঞ্জিন চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে মঙ্গলবার শেষ রাত থেকে বুধবার বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নাম্বার ০৩১-৬১১৫৪৫ এবং মোবাইল নাম্বার ০১৭০০৭১৬৬৯১। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ গাড়ি এবং পর্যাপ্ত খাবার পানি মজুত রেখেছে। এছাড়াও ১০টি ওয়ার্ডে ১০টি মেডিকেল টিম এবং ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!