চকরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের বেহাল দশা

চকরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের বেহাল দশা 1মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া : ‘ওস্তাদ সামনে ভাঙ্গা আস্তে যান’ বলতেই চালক গাড়ি ব্রেক কসলো এবং আস্তে আস্তে গাড়ি চালিয়ে সড়কটি পার হয়। এভাবেই কথা হচ্ছিল চালক আর হেলপারের মধ্যে। চারদিনের ভয়াবহ বন্যা আর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ভেঙ্গে গেছে কক্সবাজারের চকরিয়ার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক। আর এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে চালক-যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।
এসময় কথা হয় গাড়ির চালক সাহাবউদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, গাড়ি চালাতে খুব সমস্যা হচ্ছে। একটুু যেতেই ব্রেক করতে হচ্ছে। বন্যার কারণে সড়কগুলো ভেঙ্গে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। সড়কগুলো পার হতে যেমন গাড়ির সমস্যা হচ্ছে তেমনি সমস্যা হচ্ছে যাত্রীদের। সময়ও লাগছে বেশি।
ওই গাড়ির হেলপার জমির মিয়া বলেন, ভাই চকরিয়া স্টেশন থেকে অল্প যাত্রী নিয়ে কোণাখালী যাচ্ছি। রাস্তার যে অবস্থা সারাদিন এক টিপের উপর মারতে পারিনা।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সম্প্রাতিক সময়ে ভয়াবহ বন্যায় চকরিয়ার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সড়কগুলো বালি আর ইট দিয়ে চলাচল উপযোগী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাতেও কোন কাজ হচ্ছেনা।
চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের প্রধান সড়কের মধ্যম কোনাখালী এলাকার বাসিন্দা সাহাব মিয়া মাঝি বলেন, সম্প্রতি বন্যার ঢলের পানি এ সড়ক উপচে লোকালয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। মধ্যম কোনাখালী লতাবুনিয়া পাড়া সুইচ গেইটে পূর্ব ও পশ্চিম পাশে দুটি আলাদা অংশে প্রায় আধা কিলোমিটার ভেঙ্গে সড়কের এ নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও সড়ক মেরামতে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। অতি দ্রুত এসব সড়ক সংস্কার করা না হলে যাতায়তে চরম সমস্যায় পড়তে হবে। তাছাড়া ঝুঁকিও রয়েছে।
সওজ ও এলজিইডি’র অফিস সুত্রে জানা গেছে, বন্যার পানিতে এলজিইডি ও সওজের আওতাধীন অধিকাংশ গ্রামীন সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় বিশাল গর্ত হয়েছে। আর এতে দুটি দপ্তরের ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে এলজিইডির সড়কের ক্ষতি হয়েছে ৩০ কোটি টাকার এবং সওজের ক্ষতি হয়েছে ১২ কোটি ৫০ লাখ টাকার।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়–য়া বলেন, সম্প্রাতিক সময়ের ভয়াবহ বন্যার ফলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার এবং চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৫০ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ১২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ক্ষয়-ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে ইতিমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কগুলো মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
চকরিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করে বিভিন্ন দপ্তরে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রামীণ সড়কগুলো মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। যাতে করে সাধারণ মানুষের দু:খ লাগব হই।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!