১০ টাকায় ‘উত্তর’ বিক্রির সেই দোকান সিলগালা, চট্টগ্রাম প্রতিদিনে খবর প্রকাশের জের

৩ টাকায় অ্যাসাইনমেন্ট, ১০ টাকায় উত্তর মেলে ফটোকপির দোকানে’ শিরোনামে গত ২৪ জুলাই (রবিবার) চট্টগ্রাম প্রতিদিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকানে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হাসান চৌধুরী ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন।

সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় অ্যাসাইনমেন্টের উত্তরপত্র বিক্রির দায়ে এসএস কম্পিউটার এন্ড ডিজিটাল স্টুডিও নামে একটি ফটোকপির দোকান সিলগালা করে দেওয়া হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন জানান, অ্যাসাইনমেন্ট বিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা হবে এবং উত্তর শিক্ষাথীরা নিজেরাই লিখে বিদ্যালয়ে জমা দেবে। কিন্তু আনোয়ারায় বিভিন্ন ফটোকপির দোকানে অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর সরবরাহের সংবাদ পেয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে।

এ সময় একটি ফটোকপির দোকান সিলগালাসহ স্বত্ত্বাধিকারীর কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাসাইনম্যান্ট প্রশ্ন ৩ টাকা। উত্তর ১০ টাকা, এখানে ১০ম সপ্তাহের এ্যাসাইনম্যান্ট প্রশ্ন ও উত্তর সহকারে পাওয়া যায়’— এসব কথাবার্তা লিখে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকানে বিক্রি হচ্ছিল চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। শনিবার (২৪ জুলাই) সকালে উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের বাদামতল এলাকায় এস. এস কম্পিউটার এন্ড ডিজিটাল স্টুডিও নামের একটি দোকানে এমন সাইনবোর্ড ঝুলতে দেখা যাওয়ার পর ওইদিনই চট্টগ্রাম প্রতিদিনে ‘৩ টাকায় অ্যাসাইনমেন্ট, ১০ টাকায় উত্তর মেলে ফটোকপির দোকানে’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, করোনা মহামারির কারণে সরকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোযোগী রাখতে অ্যাসাইনম্যান্ট ভিত্তিক পাঠ চালু করে। প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা এখন অ্যাসাইনম্যান্ট পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। অ্যাসাইনম্যান্টগুলো নিজ নিজ বিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা হয়। এক সপ্তাহ পর শিক্ষার্থীরা বিষয় ভিত্তিক উত্তর বিদ্যালয়ে জমা দিয়ে থাকে। আগামী এসএসসি ও এইসএসসি পরীক্ষাও অ্যাসাইনম্যান্ট পদ্ধতিতে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এভাবেই করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের মেধার মূল্যায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু এই অ্যাসাইনম্যান্টের উত্তরসহ যদি কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান থেকে সরবরাহ করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের মেধা ভিত্তিক মূল্যায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আনোয়ারার বিভিন্ন মহল ও অভিভাবকদের মাঝে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বখতিয়ারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি বলেন, ‘করোনা মহামারির পর থেকে বিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সরকার। অ্যাসাইনম্যান্টের মাধ্যমে বিগত বার্ষিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই অ্যাসাইনম্যান্ট শিক্ষার্থীকে নিজ থেকেই লিখতে হবে। না হলে মেধার মূল্যায়ন হবে না। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে অভিভাবকদেরও।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!