চট্টগ্রামে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের মূল হোতা আটক র‌্যাবের হাতে, খুঁজে পায়নি পুলিশ

চট্টগ্রামে কলেজছাত্রী তরুণীকে ধরে নিয়ে দিনভর ধর্ষণ করার পর রাতে ছুরি দিয়ে আহত করে পালিয়ে যাওয়া সেই কিশোরগ্যাং লিডার শাহাদাতকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রামের র‌্যাব-৭। থানার পুলিশ না পারলেও ছায়াতদন্ত শুরু করে র‌্যাব-৭ ধরে দিল চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের মূল এই হোতাকে।

জানা গেছে, র‌্যাব-৭ গোপনে জানতে পারে, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ওই ঘটনার প্রধান আসামি কিশোর গ্যাং লিডার শাহাদাত হোসেন (২৫) চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মনসা বাদামতল এলাকায় অবস্থান করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ জুলাই (সোমবার) সকাল সাড়ে নয়টায় র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের একটি দল মনসা বাদামতল এলাকায় অভিযান চালায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শাহাদাত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা তাকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে। শাহাদাত পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের নুরুল আলমের ছেলে।

জানা গেছে, গত ১০ জুলাই পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের গোয়াতলী গ্রামে কুখ্যাত কিশোরগ্যাং লিডার শাহাদাত হোসেন (২৫) এক তরুণীকে (২১) দিনভর আটকে রেখে ধর্ষণ করে। পরে এবং রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে পালিয়ে যায়।

পরে গোয়াতলী এলাকার লোকজন রাস্তার পাশে একটি ঝোঁপের মধ্যে নাড়িভূঁড়ি বের হয়ে থাকা অবস্থায় ওই তরুণীকে দেখতে পেয়ে দ্রত পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ভিকটিমের বড় ভাই পর দিন ১১ জুলাই বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। ওই তরুণী বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশংকাজনক।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণী শনিবার (১০ জুলাই) সকালে কলেজে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। কলেজ থেকে বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পটিয়ার ছনহরা ইউনিয়নের গোয়াতলী এলাকা থেকে এক ব্যক্তি মেয়েটির ভাইয়ের মোবাইল ফোনে জানান, তার বোন গোয়াতলীর সাবিত্রী আশ্রমের পাশে রাস্তা সংলগ্ন ঝোঁপের ভেতর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

ঘটনা শুনে ওই কলেজছাত্রীর দুই ভাই ও ভগ্নিপতি ঘটনাস্থলে এসে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মেয়েটির পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক যুবকের সঙ্গে তার কিছুদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। শনিবার সকালে ছাত্রী তার সঙ্গে দেখা করার জন্য পটিয়া যান। সারাদিন ঘোরাফেরার পর রাত ১০টার দিকে ঝোঁপে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে ওই যুবক। এর একপর্যায়ে ছাত্রী ঝোঁপ থেকে বের হয়ে সাবিত্রী আশ্রমের দিকে চলে আসার চেষ্টা করলে ওই যুবক ছাত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে পেটের দুই পাশে আঘাত করে ও মাথায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়।

এদিকে এ ঘটনায় এলাকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হওয়ার পর র‌্যাব-৭ ওই ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে।

ধরা পড়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহাদাত ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এরপর তাকে পটিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!