স্কুল খোলার পর যেসব শর্ত মানতে হবে, আজ যারা আসবে তারা কাল আসবে না

৩ ফুট দূরত্ব রেখে ছোট বেঞ্চে বসবে একজন

প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর দেশের সব স্কুল ও কলেজ আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পালন করতে হবে বিশেষ কিছু শর্ত। অন্যদিকে খোলার পর এসব শর্ত ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে কিনা সেটা যেমন দেখবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, তেমনি স্কুল খোলার পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কেমন হয় দেখা হবে সেটাও।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিটি স্কুলের ওপর প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট দেওয়া হবে। যেখানে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই সেখানে বিকল্প দিনে ক্লাস নেওয়া হবে।

এছাড়া স্কুল ও কলেজগুলোকে তিনটি বিষয় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। এগুলো হচ্ছে— তাপমাত্রা পরীক্ষা করে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের ব্যবস্থা করা, প্রবেশের পর মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

এর আগে সরকারিভাবে স্কুলগুলোতে ইউনিসেফের সহায়তায় তৈরি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানের সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবসময় মাস্ক পরতে হবে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের রাখতে হবে তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রেণি কক্ষে ৫ ফুটের চেয়ে ছোট আকারের বেঞ্চিতে একজন এবং এর চেয়ে বড় আকারের বেঞ্চিতে সর্বোচ্চ দুজন শিক্ষার্থীকে বসানো যাবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার শুরুর দিকে পাবলিক পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরাই বেশি আসবে। বাকিদের স্কুলে আসার জন্য রোটেশন সিস্টেম অর্থাৎ আজ যারা আসবে তারা কাল আসবে না— এমন নীতি অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার পর কিভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে গত জানুয়ারিতে তার বিস্তারিত গাইডলাইনসহ নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। জানানো হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (সরকারি/বেসরকারি, আবাসিক/অনাবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) এই নির্দেশিকা ব্যবহার করতে পারবে। সেই গাইডলাইনে যেসব বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে—

১. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্টাফ ও সংশ্লিষ্ট সবার সর্বদা মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা।
২. প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রমে নির্দেশিত (৩ ফুট) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৩. একসঙ্গে অধিক সংখ্যক মানুষের জমায়েতকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
৪. প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্দিষ্ট সময় পর পর নিয়ম মেনে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ও পরিষ্কারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৫. হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার পালন করা ও উৎসাহিত করতে হবে।
৬. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেঝেসহ সব এলাকা প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পানি, স্যানিটেশন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধা রাখা এবং পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
৮. শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা এবং কেউ অসুস্থ/আক্রান্ত থাকলে/হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার পাশাপাশি কন্টাক্ট ট্রেসিং করে অন্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সর্বশেষ চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে সরকার। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় মোট ২৩ দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!