সুদীপ্ত হত্যার নির্দেশদাতা মাসুম, নেতৃত্ব দেন আইনুল কাদের নিপু

২৪ জনকে অভিযুক্ত করে পিবিআই’র চার্জশিট

চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যাকাণ্ডের ৩৯ মাস পর মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ।

রোববার (৩১ জানুয়ারি) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা মহানগর আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্রটি জমা দেন।

আদালত ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্রের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন বলে জানান সন্তোষ কুমার চাকমা। অভিযোগপত্রে ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে ৭৫ জনকে।

চার্জশিটে অভিযুক্ত ২৪ জনের মধ্যে আছেন, আইনুল কাদের নিপু, মোক্তার হোসেন, নিয়াজ মোরশেদ নিপু, জে সালাউদ্দিন, আবু জিয়াদ সিদ্দিকী, জাহিদুর রহমান, রুবেল কান্তি দে, ফয়সাল আহমেদ পাপ্পু, মিজানুর রহমান, আমিন হোসেন বাবু ও জিয়াউল হক ফয়সাল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগপত্রে দিদারুল আলম মাসুমকে সুদীপ্ত হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দিয়ে আসামি হয়েছেন আইনুল কাদের নিপু। ফয়সাল আহমেদ পাপ্পুর আঘাতে সুদীপ্ত মারা গেছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংশ্লিস্ট আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামিদের ১৮ জনকে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছয়জন এখনও পলাতক আছেন। এর আগে ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট রাতে এই মামলায় রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল দিদারুল আলম মাসুমকে। কিন্তু পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।

জানা যায়, হত্যার ‘হুকুমদাতা’ আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের কাউকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে অনেকের মাঝে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সেই আশংকাকে উড়িয়ে দিয়ে দিদারুল আলম মাসুমকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দিল পিবিআই।

এ প্রসঙ্গে সন্তোষ কুমার চাকমা আরো বলেন, এ পর্যন্ত আমরা সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করিনি। যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তারা বিভিন্নভাবে অভিযুক্ত এ হত্যাকাণ্ডের সাথে। সুতরাং সবাইকে আসামি করা হয়েছে। আর যেহেতু এটি একটি সেনসিটিভ মামলা তাই আমরা সময় নিয়ে সঠিক তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র জমা দিতে পেরেছি।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে। হত্যাকাণ্ডের পর সুদীপ্তর বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদি হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাত সাত-আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এক বছর পর সুদীপ্তের পিতার আবেদনে আদালত এর তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়।

হত্যাকাণ্ডের জন্য ছাত্রলীগের একাংশ লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুমকে দায়ী করলেও গ্রেপ্তারকৃতদের কারও জবানবন্দিতে তার নাম আসেনি; এক ‘বড় ভাই’ হুকুমদাতা ছিলেন বলে তাদের ভাষ্য। গত বছরের ১২ জুলাই গ্রেপ্তার হওয়া মিজান হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে মাসুমের নাম বলার পর গ্রেপ্তার হন মাসুম।

তিনি ছাড়াও এ মামলায় আরও ১৭ গ্রেপ্তার হয়েছেন, যারা সবাই মাসুমের অনুসারী বলে পরিচয় দিয়েছেন। এদের মধ্যে চার জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!