সাতকানিয়ায় জনতার সঙ্গে মতবিনিময়ে পুলিশ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চায় মানুষ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানা পুলিশ নলুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গাটিয়াডেঙ্গায় স্থানীয় জনগণের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে।

সাতকানিয়ায় জনতার সঙ্গে মতবিনিময়ে পুলিশ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চায় মানুষ 1

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের জনগণকে নিয়ে এ মতবিনিময় সভা করা হয় হাঙ্গরমুখ বাজার এলাকায়। মতবিনিময় সভায় স্থানীয় জনগণ তাদের বিভিন্ন অভিযোগ অনুযোগ ও সাম্প্রতিক সময় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এতে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতকানিয়া সার্কেল এএসপি শিবলী নোমান। তিনি বলেন, ‘আপনারা ভয় পাবেন না। নির্ভয়ে পুলিশকে তথ্য দেন। আমরা কথা দিচ্ছি আপরাধী ও অপরাধীদের প্রশ্রয়দাতাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো পর্যায়ক্রমে।’

সভাপতির বক্তব্যে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াসির আরাফাত বলেন, এলাকার কিছু বহিরাগত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। জামশেদ নামে এক শিবির ক্যাডার এর জন্য দায়ী। সন্ত্রাসীদের ধরে পুলিশকে খবর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মোস্তাক আহমেদ আঙ্গুর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আহমদ মিয়া, নলুয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলী, নলুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল দাশ মানিক, সাতকানিয়া থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম, ঢেমশা তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ ছৈয়দ ওমর।

সমাবেশে স্থানীয়রা নলুয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চিত্র তুলে ধরেন। তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময় এই ওয়ার্ডের শান্তি শৃঙ্খলা চরমভাবে অবনতি হয়েছে। একটি চিহ্নিত মহলের ইন্ধনে এলাকার কিছু উঠতি যুবক ও কিশোর নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হচ্ছে। তারা মাদকসেবন ও ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েছে। কথায় কথায় গুলি ছুঁড়ে মারধর করে আতংক সৃষ্টি করছে এলাকায়। তাদের বিরুদ্ধাচরণ করলেই চালানো হয় হামলা। এলাকায় তাদের আধিপত্য বিস্তার ও সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে রাখার জন্য এমন কোনো কাজ নেই যা তারা করেন না। সাধারণ মানুষ এসব থেকে পরিত্রাণ চায়। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চায় স্থানীয় জনগণ।

পুলিশের কর্মকর্তারা স্থানীয় জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ‘পুলিশ জনগণের সেবক, বন্ধু। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ। যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের দায়িত্ব থেকে পিছু হটাবো না। নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য সাধারণ মানুষ কেনো বলির পাঠা হবে? তারা কেনো আতংকে থাকবে? জনগণের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ যেকোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবে। যতো বড়ো ক্ষমতাধর হোন না কেনো, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এখনও সময় আছে সাবধান হয়ে যান। সংঘাতের পথ পরিহার করে সঠিক পথে ফিরে আসুন। আইনের প্রতি সম্মান দেখান, প্রশাসন সদয় হবে।’

পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমরা জানি এলাকার কোন মানুষ কেমন, কারা কি করেন। আমাদের কঠোর হতে বাধ্য করা হলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এলাকাবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

এছাড়া স্থানীয় জনগণকে সচেতন হয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় মতবিনিময় সভায়।

তদন্তকেন্দ্রের এসআই জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক থানা ছাত্রলীগ নেতা আবদুল মান্নান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম সেলিম, থানা যুবলীগ নেতা এটিএম সাইফুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ নবী, যুবলীগ সভাপতি জহির উদ্দিন মিন্টু, আলমগীর মো. আবু সুফিয়ান, শাহনেওয়ার মো. আবু খলিল, শাহজাহান মো. টুন্টু, আবদুল আজীজ, মো. ইব্রাহীম, মো. হাসান, মো. হোসেন, শহীদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম বাচা, মো. মোজাম্মেল, শিরিন আকতার, ফরিদা ইয়াসমিন, জাফর আহম্মদ ভুট্টো, মনসুর আহম্মদ, মো. মুসা, আখতারুজ্জামান রাসেল, আবদুর রহমান, মামুন প্রমুখ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!