মালিঙ্গাকে বিদায়ী উপহার দিল বাংলাদেশ

বাংলাদেশকে ৯১ রানে হারালো শ্রীলঙ্কা

লাসিথ মালিঙ্গার বিদায়ী ম্যাচে তাঁকে জয় উপহার দিলেন দেশের ১৪তম ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল অ্যান্ড কোং। আর তাতে করে প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের হিসেবটা বদলালো না একটুও।

প্রেমাদাসায় ওয়ানডে ক্রিকেটে জয়টা বাংলাদেশের অধরাই রইলো। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কা ৯১ রানে জিতে এগিয়ে গেলো ১-০ তে। শ্রীলঙ্কার ৩১৪ রানের জবাবে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ ২২৩ রানে।

মালিঙ্গাকে বিদায়ী উপহার দিল বাংলাদেশ 1
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেই ধস নামান মালিঙ্গা।

এই ম্যাচে বাংলাদেশ মুলত ছিটকে পড়লো শুরুর ব্যাটিংয়েই! ১২ ওভারের মধ্যে ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের পরবর্তী কাজটা হয়ে দাড়ালো সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার। সেই লড়াইয়ে সাব্বির ও মুশফিক ছাড়া বাকি সবাই ‘পরাজিত’!

মিডলঅর্ডারে বাংলাদেশের এই দুই ব্যাটসম্যান হাফসেঞ্চুরি করেন। তবে সেটা বাংলাদেশের হারের সময়টা কেবল একটা দীর্ঘ করলো; বড় হার ঠেকাতে পারলো না।

মালিঙ্গাকে বিদায়ী উপহার দিল বাংলাদেশ 2
সাব্বির-মুশফিক বাংলাদেশের ইনিংসের হাল ধেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারাও নিজেদের অর্ধশতকের পরপর বিদায় নেন।

প্রেমাদাসার উইকেটে ব্যাটিং খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। ম্যাচের প্রথমার্ধে শ্রীলঙ্কা সেটা বেশ ভালোভাবেই জানান দিলো। কুশাল পেরেইরা সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে। নিজের সর্বশেষ সেঞ্চুরিও এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই। মিডল অর্ডারে কুশাল মেন্ডিস ও অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা তিনশ প্লাস স্কোরে পথে হাঁটে।

সাত বোলারের বোলিং এবং অধিনায়ক তামিমের বোলিং পরিকল্পনা-কোনো কিছুই এই ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য সুখকর কিছু হয়নি। স্ট্রাইক বোলার হিসেবে দলে তার অর্ন্তভুক্তি। অথচ সেই মুস্তাফিজ বোলিংয়ে এলেন পঞ্চম বোলার হিসেবে! সৌম্য সরকার ৫ ওভারে ১৭ রানে ১ উইকেট তুলে নিলেন। কিন্তু তাও তিনি বোলিং কোটা কেন পুরো করতে পারলেন না-বিস্ময়সূচক প্রশ্ন সেটা!

মাহমুদউল্লাহ করলেন মাত্র একওভার। অথচ তিনি বোলিং করার মতো ফিট বলে দাবি আছে। মুস্তাফিজ ২ উইকেট পেলেন। তবে ১০ ওভারে খরচা গুনলেন ৭৫ রান! শফিউল ইসলাম প্রায় দু’বছর পরে দলে হঠাৎ ডাক পেয়ে এই ম্যাচে সফল বোলার। ৯ ওভারে ৬২ রানে তুলে নিলেন ৩ উইকেট। ১৬ টি ওয়াইড ও ১টি নো বলের পরিসংখ্যান এই ম্যাচে বোলারদের ব্যর্থতার আরেক চিত্র।

তবে বোলারদের চেয়ে মাঠে ফিল্ডারদের ব্যর্থতা ছিলো আরো প্রকট! পায়ের ফাঁক গলে বলে চলে যাচ্ছে। হাতে আসা ক্যাচ তালু থেকে ফস্কে গেলো। এমন ভয়াবহ ফিল্ডিং ব্যর্থতা সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কাকে ৩১৪ রানে আটকে রাখা গেছে- এটাই যে অনেক!

তবে শ্রীলঙ্কার ৩১৪ রানের স্কোরটা বাংলাদেশের এই ব্যাটিং লাইনআপের জন্য ‘অনেক বড়’ হয়ে দাড়ালো। বিদায়ী ম্যাচে লাসিথ মালিঙ্গা তার সেই চিরচেনা টো-ক্রাশার ইয়র্কারের খেল্ দেখালেন। তামিমকে ফেরালেন শূন্য রানে, তার সেই ট্রেডমার্ক ইর্য়কারে। খানিকবাদে সৌম্য সরকারের স্ট্যাম্পও উড়িয়ে দিলেন একই কায়দায়।

বাংলাদেশের ইনিংস ভাঙ্গার কাজ শুরু করেন মালিঙ্গা। বাকি কাজ সারেন নুয়ান প্রদীপ ও স্পিনার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। শেষ উইকেট নিয়ে ম্যাজের ফিনিংসটাও টানেন মালিঙ্গা। ৩৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বিদায় বেলাও ঠিকই রাঙিয়ে গেলেন শ্রীলঙ্কান এই গ্রেট!

বাজে বোলিং। আরো বাজে ফিল্ডিং। এবং ব্যর্থ ব্যাটিং। কলম্বোর প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের চালচিত্র এটি।

ফল?

৯১ রানের হার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৩১৪/৮(৫০, কারুনারত্নে ৩৬, কুশাল পেরেরা ১১১, কুশাল মেন্ডিস ৪৮, ম্যাথুস ৪৮, শফিউল ৩/৬২, মুস্তাফিজুর ২/৭৫, সৌম্য ১/১৭)।
বাংলাদেশ: ২২৩/১০ (৪১.৪ ওভারে, তামিম ০, সৌম্য ১৫, মিথুন ১০, মুশফিক ৬৭, মাহমুদউল্লাহ ৩, সাব্বির ৬০, মোসাদ্দেক ১২, শফিউল ২, রুবেল ৬*, মুস্তাফিজ ১৮, মালিঙ্গা ৩/৩৮, প্রদীপ ৩/৫১, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ২/৪৯)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৯১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: কুশাল পেরেরা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!