পাশাপাশি নাছির-দোভাষ/সুসম্পর্কের আভাস

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা কমতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে গলছে দুই সংস্থার সম্পর্কের বরফ। দুই সংস্থার প্রধান কর্তার পাশাপাশি অবস্থান এমন বার্তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সম্প্রতি দুই প্রধানের সম্মতিতে সাগরিকা স্টেডিয়াম এলাকায় আউটার রিং রোডের একটি সমস্যা সমাধান হয়েছে। নাছির-দোভাষের এমন সমন্বয়ে দুই সংস্থা ও দুই কর্তার মধ্যে সুসম্পর্কের আভাস মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ‘প্রকল্প গ্রহণে সিটি মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানের মধ্যে সমন্বয় ও আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন আছে।’

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকালে টাইগারপাস সিটি করপোরেশন কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম নগরীতে মেট্রোরেল চালুর বিষয়ে প্রাক যোগ্যতা সমীক্ষা রিপোর্ট উপস্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি এবং সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘প্রতিটি সেবা সংস্থাই একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, পরিপূরক। সিডিএর সঙ্গে চসিকের চুল পরিমাণ গ্যাপ নেই। সিডিএ চেয়ারম্যানের সাথে আমি নিয়মিত যোগাযোগ করছি। মেট্রোরেল লাইন চালুতে সিডিএ অনাপত্তি দিলে আমরা কাজটি করতে পারবো।’

মেট্রোরেল চালুর উদ্যোগের জন্য সিটি মেয়রকে সাধুবাদ জানান এম জহিরুল আলম দোভাষ। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন সিডিএ চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘এক সংস্থার কাজ যেন অন্য সংস্থার জন্য বাধাগ্রস্ত না হয়। সিডিএ-সিটি করপোরেশন সরকারের অনুদানে চলে। সরকারের অনুদান পেলে দুই সংস্থার জন্য সুবিধা হয়।’

দুই কর্তার সমন্বয়ে খুশি উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা। পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, ‘ সিডিএ-চসিকের সমন্বয় নেই এ রকম শুনি। দুই নেতাকে একসঙ্গে দেখে ভালো লাগছে। আশা করি, প্রকল্পে দুই জন একসঙ্গে কাজ করবেন। তারা দুইজনই সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। চট্টগ্রামের উন্নয়নে দুই জনেরই পূর্ব পুরুষেরা চিন্তা করে গেছেন।’

স্থপতি ও সিডিএ বোর্ড সদস্য স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ‘মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানের মধ্যে সমন্বয় হচ্ছে। প্রত্যেক প্রকল্পে তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন আছে।

অনুষ্ঠানে মেট্রোরেল নির্মাণ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘নগরে যানজট নিরসনে মেট্রোরেলের বিকল্প নেই। ম্যাস রেপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এই সমীক্ষার উপর আরো বৃহত্তর পরিসরে মতবিনিময় হবে। এরপর চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী আলী আশরাফ বলেন, ‘মেট্রোরেল চালুর উদ্যোগ একটি সাহসী উদ্যোগ। এটি বাস্তবায়ন হলে সুফল আসবে। তবে আরো কাজ করতে হবে। হুকুম দখলে খরচ কমাতে হবে। এক্সিসটিং অ্যালাইনমেন্ট দিয়ে প্রয়োজনে ৫০০ মিটার আগে-পিছে মেট্রোরেল লাইন করা যেতে পারে।’

অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, ‘মেট্রোরেল লাইন চালুর বিষয়ে অনেক মতামত ও স্টাডির প্রয়োজন। মনে রাখতে চট্টগ্রাম বন্দরকে মাথায় নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। বন্দরকে বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না।’ নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে এবং আইএসপিএস কোড মানলে বন্দরের ওপর দিয়ে ফ্লাইওভার করা যাবে না।’

চসিক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের ভিসি রফিকুল আলম, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র রায়, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, প্রকৌশলী মো. হারুন, স্থপতি সোহেল শাকুর, স্থপতি আশিক ইমরান প্রমুখ।

এমএ/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!