ভিক্ষুক মাকে জুস খাইয়ে কোলের শিশু চুরি ইপিজেডে
অন্য দিনের মতো শিরিন আক্তার চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার বিপরীতে নাবিক কলোনির সামনে ভিক্ষা করছিলেন। কোলে ৬ মাসের শিশু শুভ। পথচারীর ছদ্মবেশে থাকা শিশু চোর জাফর সাদেক আফসার ও ইকবাল হোসেন দয়া দেখিয়ে শিরিনকে জুস এগিয়ে দেয়। খুশিমনে শিরিন সেই জুস পান করার পর আর কিছুই তার স্মরণ নেই। শুধু জানেন তার কোলের শুভকে হারিয়েছেন তিনি!
ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের মার্চ মাসে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নতুন দায়িত্ব পান ইপিজেড থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন। তিনি আরেক এসআই জিল্লুর রহমান, এএসআই রিকো ও আব্দুল হান্নানকে সাথে নিয়ে নগরীর চকবাজার, জেলার হাটহাজারী ও ফটিকছড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে আজ শুক্রবার সকালে মা শিরিনের কোলে ফিরিয়ে দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এসআই কামাল হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্দেহভাজন এক ধাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক নার্সের সন্ধানে প্রথমে চকবাজার এলাকায় একটি ক্লিনিকে অভিযান চালাই। কিন্তু চকবাজার এলাকার ওই ক্লিনিক থেকে সে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। তথ্য নিয়ে যাই তার নতুন কর্মস্থলে। তাকে হাটহাজারীতে পেয়ে যাই। তার দেওয়া তথ্যানুসারে ফটিকছড়ি এলাকার এক প্রবাসী দম্পতির কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করি। পাশাপাশি শিশুটিকে চুরির সাথে সম্পৃক্ত আফসার ও ইকবালকেও আটক করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আফসারের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এবং ইকবালের বাড়ি কুমিল্লায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে একটি বাচ্চা চুরি করেছিল বলে স্বীকার করেছে। আফসার ও ইকবাল এর আগে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া অপর একটি মামলায় কক্সবাজার থেকে আটক হয়েছিল।
জানা গেছে, প্রবাসী দম্পতি শুভর নতুন করে নাম রেখেছে মিরাজ। প্রতারক চক্র ওই প্রবাসি দম্পতিকে বলেছিল শুভর মা ক্যান্সারে মারা গেছে। একটা এতিম ছেলেকে নিজেদের মতো করে লালন-পালন করার সুযোগ পেয়ে খুশি হয়ে তারা প্রতারক চক্রকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা বকশিশ দেন।
সিএমপির গণসংযোগ শাখা জানিয়েছে, শিশু উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর জন্য শনিবার (২৩ নভেম্বর) সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
এফএম/এসএ