ব্যবসায়ীর আড়ালে হত্যা মামলার আসামি, এবার পেটালেন স্ত্রীকে

ভালোবেসে মামুনুর রশিদকে বিয়ে করেন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার জাহেদা বেগম। পরিবার ছেড়ে ভরসা করে যার হাত ধরেছিলেন তিনিই বিয়ের কিছুদিন পর থেকে শুরু করেন অমানবিক নির্যাতন। সংসার জীবনের দুই দশকেও কমেনি অত্যাচারের মাত্রা। স্ত্রীর অগোচরে অন্য একটি সংসারও পেতেছে তিনি। একইসঙ্গে স্কুলছাত্র হত্যা মামলার প্রধান আসামিও মামুনুর।

শনিবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার সাতবাড়িয়া আরিফ শাহ পাড়া এলাকায় নিজ ঘরে স্ত্রী জাহেদাকে বেধড়ক মারধর করেন মামুন। এই সময় স্বামীর লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন জাহেদা। এই বিষয়ে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

মামলায় অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ একই এলাকার মৃত নুরু ইসলামের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার ফিরিঙ্গীবাজার এলাকার আল মক্কা ফার্ম নামের এক আড়ৎদার ব্যবসায়ী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন মামুন ও জাহেদা। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে স্ত্রীকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতেন মামুন। এই টানাপোড়েনের মধ্যে সংসার জীবনে তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তাদেরও শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করেন মামুন।

জাহেদার অজান্তে ২০১৩ সালে মামুন দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন উল্লেখ করা হয় অভিযোগে। এরপর থেকে যৌতুকের দাবিতে জাহেদাকে মারধর করতেন। নির্যাতনে শিকার জাহেদার পিতা-মাতার ইন্তেকালে ভাইদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ৮০ হাজার টাকা এনে দেন স্বামীকে।

অভিযোগ থেকে আরও জানা গেছে, যৌতুকের দাবিতে গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাহেদাকে মারধর করেন মামুন। এতে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন জাহেদা। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করান। এই বিষয় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।

জাহেদা বেগমের বড় ভাই নজরুল বলেন, ‘শনিবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে মারধর করেন মামুন। এই সময় আমার বোন জাহেদাকেও বেধড়ক পিটিয়ে কপাল ফাটিয়ে দেন। পরে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালাবদ্ধ করে দেন। তারা বর্তমানে আমাদের বাড়িতে অবস্থান করছে।’

জানা গেছে, ২০০৫ সালের ৩১ জানুয়ারি একই এলাকার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ফারুক আহমেদ অন্তর হত্যা মামলার প্রধান আসামি মামুনুর রশিদ। স্কুল ছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলায় একই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি চন্দনাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলাও রয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পারিবারিক কলহের বিষয়গুলো তদন্ত করে মামলা নেওয়া হয়। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।’

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!