বায়ুদূষণকারী চসিক-সিডিএ-ওয়াসার ডাক পড়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরে

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে মারাত্মক বায়ুদূষণের কারণে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বাসিন্দারা। এ জন্য নগরীর বাসিন্দারা দুষছেন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত সেবা সংস্থাগুলোকে। এজন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে। তবে এবার ঘুম ভেঙেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের। পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী সব প্রতিষ্ঠানকে ডাকতে যাচ্ছে পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি এই সংস্থাটি।

ঢাকায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে পরিবেশ অধিদপ্তর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে বায়ু দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করলেও চট্টগ্রামে সেই ধরনের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এখনও।

২৯ নভেম্বর সকালে ‘বাতাসের বিষে বিপন্ন চট্টগ্রাম, চসিক-ওয়াসা-পরিবেশ নির্বিকার‘ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসেই চট্টগ্রামের বাতাসে ভাসমান বস্তুকণার ছিল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে বা একিউআই এ ২৫৬ পিপিএম। যেটিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলছেন, অসহনীয় ও খুবই অস্বাস্থ্যকর। এ মাসের কয়েকটি দিন ছাড়া বেশিরভাগ দিনই চট্টগ্রাম নগরীর বাতাসের পিপিএমের পরিমাণ ছিল সহনশীলতার বাইরে।

এবার চট্টগ্রাম নগরীর বায়ু দূষণের জন্য দায়ী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), চট্টগ্রাম ওয়াসা, নগরীতে অবস্থিত সব স্টিল মিল কর্তৃপক্ষ, গাড়ির কালো ধোয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ ও বিআরটিএকে পরিবেশ অধিদপ্তরে ডাকা হচ্ছে। বায়ু দূষণরোধে এসব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে এবং সর্তক করা হবে। আগামী ৫ ডিসেম্বর সকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগরীর কার্যালয়ে এসব সংস্থাকে ডাকা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের পরিবেশ দুষণের জন্য কারা দায়ী সেটা আপনি আমি সবাই অবগত। এর বেশিরভাগই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নিয়োজিত ঠিকাদারদের দায়িত্বশীল আচরণের অভাবে হচ্ছে। দায়ী এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আগামী ৫ ডিসেম্বর তাদের নিয়ে বসব। এর একটি সলিউশন তাদের অবশ্যই দিতে হবে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫-এ দূষণকারীদের (প্রথমবারের মতো) বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২ বছরের দণ্ড, সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। পরবর্তীতে প্রতি অপরাধের জন্য দুই থেকে ১০ বছর কারাদণ্ড বা ২ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

বায়ু দূষণ রোধে করণীয় প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্মাণকাজের চারপাশ ঢেকে রাখা ও পানি ছিটানো, রাস্তা খোঁড়ার সময় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঢেকে রাখা, স্টিল, রি-রোলিং মিলস ও সিমেন্ট কারখানাগুলোয় বস্তুকণা নিয়ন্ত্রণমূলক যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও ধুলাবালি কমাতে বাড়ির চারপাশে সবুজায়ন করা, ইটভাটায় পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি ব্যবহার, গাড়ি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা, যানজট এড়াতে ট্রাফিক আইন মেনে চলা এবং দূষণ রোধে নিয়মিত মেইনটেন্যান্স করা।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!