বার্মায় মুসলমানদের উপর জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন : রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ হেফাজত ইসলামের

প্রতিদিন রিপোর্ট :

মিয়ানমারের জাতিগত সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে আগত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামীর নের্তৃবৃন্দরা।

 

ইসলামী ছাত্র খেলাফত চট্টগ্রাম মহানগরের নের্তৃত্বে বার্মায় রোহিঙ্গা মুসলিম গনহত্যা ও নির্যাতন বন্ধের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ অনুরোধ করেন তারা।

img_0199

আজ বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এ মানববন্ধন ও সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আল্লামা হাফেজ তাজুল ইসলাম বলেন, বার্মায় মুসলমানদের উপর যে ধরণের জুলুম নির্যাতন হচ্ছে, তার প্রতিবাদ না করলে বিশ্বে আল্লাহর গজব নেমে আসবে। তিনি আরো বলনে, খোদায়ী গজব হতে বিশ্বকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে রোহিঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা লোকমান হাকীম বলেন, মায়ানমারের সরকার ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর হামলা চালিয়ে অসহায় নারী, পুরুষ ও শিশুদের হত্যা করছে। ঘর বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করছে। অনেকেই জীবন বাচাঁতে দেশান্তরিত হয়েও পার পাচ্ছেনা, বাংলাদশে সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠাচ্ছে। তিনি মিয়ানমারের জাতিগত এ সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে আগত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

 

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ইসলামী ঐক্যজোট ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী বার্মায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অব্যাহত হত্যা, নির্যাতন ও ধমনাভিযানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বলনে, বর্তমান দুনিয়ার সবচেয়ে স্বল্পমূল্য জিনিসগুলোর তালিকায় চলে এসেছে মুসলিমদের রক্ত। তাইত মায়ানমারে প্রতিদিন মুসলিম গণহত্যা হলেও সবাই নিরব। কেউ প্রতিবাদ করছেন না।

 

নের্তৃবৃন্দরা জানান, সারাবিশ্বে ৫৭টি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমি দেশ থাকা সত্ত্বেও মুসলমানদের গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে কেউ কোনো প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। এখন বসে থাকার সময় নেই। এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে র্বামায় মুসলমানদের রক্তের হুলিখেলা বন্ধ করতে বিশ্ব মুসলিমকে জেগে উঠতে হবে। img_0170

 

মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী জাতিসংঘ ও ওআইসির মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমার সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বলনে, বাংলাদেশে সরকারকে আন্তর্জাতিক এ সংস্থা দুইটির মাধ্যমে মায়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

 

ইসলামী ঐক্যজোট কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আ.ন.ম আহমদ উল্লাহ মায়ানমার সরকার ও বৌদ্ধধর্মবালম্বীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার দাবি করে বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিম নারী ও শিশু সহ শতাধিক নিরাপরাধ মানুষ হত্যার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েেছ মায়ানমার সরকার বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা শান্তি ও মানবতার শত্রু, তারা মানবাধিকারের শত্রু, তারা প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী। আর মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে ওআইসি জাতিসংঘ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আমরা তাদেরও শাস্তি দাবি করছি।

 

ইসলামী ছাত্র খেলাফত চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মাওলানা ওসমান কাশেমীর সভাপতিত্বে ও মহানগর যুগ্ম সেক্রেটারী মাওলানা আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহানগর সহ সভাপতি মাওলানা হাজী মোজাম্মেল হক, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোঃ ইউনুচ, যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ জওহর, মাওলানা ইকবাল খলিল, মাওলানা হাবিবুর রহমান হাকিম, মাওলানা অলি উল্লাহ নোমান, মাওলানা আতিক ইউসুফ, মাওলানা অলি উল্লাহ আল হাসান, মাওলানা আব্দুল ওহাহেদ মুজাহের, মাওলানা শোয়াইব বিন ফজলুল করিম, মাওলানা আবরার উল হক, মাওলানা হাফেজ আইয়ুব, মাওলানা আব্দুল খালেক, মাওলানা দিলদার হোসেন, মাওলানা নাজমুস সাকিব, মাওলানা ফয়জুর রহমান, মাওলানা মাহামুদুল হাসান হাকি, মাওলানা সোহাইল।

 

মানববন্ধনে ইসলামী ছাত্র খেলাফত কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাওলানা ইকবাল খলিল বলেন, বর্তমান সমাজে সাধারণ পশু-পাখি রক্ষা করতে বিভিন্ন ধরনের সভা সেমিনার হয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের নিজস্ব অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে পশু পাখি রক্ষা করতে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আরাকানে নিরীহ নিরস্ত্র মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে কেউ কথা বলছে না। তিনি বিশ্ব মুসলিমকে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

 

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ওসমান কাসেমী বলনে, শত শত রোহিঙ্গা নারী ও শিশু হত্যাকারী মায়ানমার সরকার ও বৌদ্ধজনগোষ্ঠীর পণ্য বর্জনের মাধ্যমে তাদের অর্থের উৎসে আঘাত হানতে হবে। তিনি আরো বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আজকের মানববন্ধনে শত শত ওলামায়ে কেরাম ও ছাত্র-জনতা উপস্থিত হয়ে প্রমাণ করেছে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর পক্ষে এ দেশের মুসলমান যে কোন আন্দোলন সংগ্রাম সফল করার জন্য প্রস্তুত। যদি আরাকানে মুসলিম গণ্যহত্যা বন্ধ না হয় তাহলে আগামীতে আরাকান অভিমুখে চট্টগ্রাম থেকে লংর্মাচ এর ঘোষণা দেওয়া হবে।

 

রিপোর্ট : রাজীব প্রিন্স

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!