বন্ধুর মৃত্যুতে ফেসবুকে পোস্ট, ২৪ ঘণ্টা না পেরুতে নিজেই প্রাণ হারালেন দুর্ঘটনায়

‘বিশ্বাস করতে পারছি না, বন্ধু এভাবে চলে যাবি আমাদের ছেড়ে। আল্লাহ পাক তোকে জান্নাতের উচ্চতম স্থান দান করুক, আমিন।’ –সড়ক দুর্ঘটনায় বন্ধুর মৃত্যুতে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই নিজেই প্রাণ হারালেন সড়ক দুর্ঘটনায়।

মর্মান্তিক এ পরিণতির শিকার হয়েছেন আইয়ুব উদ্দিন মানিক নামে পটিয়ার এক প্রবাসী। এ হতভাগা বিয়ে করতে দেশে এসেছিলেন মাত্র ২ মাস আগে।

বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ায় বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় সিএনজি আরোহী মানিক নিহত হন। এ সময় চালকসহ আরো ২ যাত্রী গুরুতর আহত হন। পটিয়ার জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার হতে ছেড়ে আসা বেপরোয়া গতির মারসা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস মনসা বাদামতল হতে পটিয়ার দিকে যাওয়া সিএনজি টেক্সিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সিএনজি চালক সহ আরো ৩ আরোহী গুরুতর আহত হন।

তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আহত ২ জনকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

অপরদিকে হাসপাতালে আনার পথেই আইয়ুব উদ্দিন মানিক (৩২) এক সিএনজি আরোহী মারা যান। নিহত আইয়ুব পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের লড়িহড়া এলাকার মৃত ইয়াকুব নবীর ছেলে বলে জানা গেছে। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আইয়ুব উদ্দিন মানিক গত ২৯ মার্চ সৌদি আরব হতে দেশে আসেন। গত ৪ এপ্রিল বিয়ে করেন।

চমেক হাসপাতালে পাঠানো গুরতর আহতদের মধ্যে মিতা (৩০) ও নাছির উদ্দীন (৩৫) শোভনদন্ডী ইউনিয়নের এলাহাবাদ এলাকার আজিজুল হকের ছেলে বলে জানা গেছে। আরেক আরোহীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মামুন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, নিহত আইয়ুব উদ্দিন মানিক ঘটনাস্থলেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা যায়।

পটিয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার তানভির আহমদ জানান, দুপুর দুইটার দিকে গুরতর আহত অবস্থায় তিনজনকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। তাদের মধ্যে আইয়ুব উদ্দিন মানিক নামের একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। অপর দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয়েছে।

ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল হতে মারসা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক-হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, লাশের ব্যাপারে তার পরিবারের উপর নির্ভর করে সুরতহাল হবে কি না। পরিবার চাইলে সুরতহাল ছাড়া লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে দাফনের জন্য। লাশটি এখনো পটিয়া হাসপাতালে আছে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!